Showing posts with label কোভিড-১৯. Show all posts
Showing posts with label কোভিড-১৯. Show all posts

Thursday, April 9, 2020

২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত বেড়ে দ্বিগুণ


দেশে গত কয়েকদিন ধরে দ্বিগুণ হারে বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। সর্বশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত করা হয়েছে ১১২ জন। অথচ এই সংখ্যাটা আগের দিন ছিল ৫৪ জন। অর্থাৎ দ্বিগুণ থেকেও বেশি।

যদি গত এক সপ্তাহের কথা বিবেচনা করা হয়, তাহলে সংখ্যাটা দাঁড়ায় ঠিক এমন ৯, ১৮, ৩৫, ৪১, ৫৪, ১১২। দেখা যাচ্ছে, প্রতিদিনই করোনা রোগী শনাক্তের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হারে বাড়ছে। যা এটা প্রমাণ করে যে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সর্বোচ্চ স্তরে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে করোনাভাইরাস সংক্রমণের স্তর চারটি। এর মধ্যে সর্বশেষ ও চতুর্থ স্তর হলো- সামাজিকভাবে তা ছড়িয়ে পড়া। অর্থাৎ দেশে এই মুহূর্তে সামাজিকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। বিদেশ ফেরতদের থেকেও বেশি সংক্রমিত হচ্ছেন সাধারণ জনগণ। ইতোমধ্যে তা ২১টি জেলা ও বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে গেছে। সংখ্যাটা ক্রমশ বাড়ছে।

চীন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, স্পেন, ফ্রান্সসহ বিশ্বের যেসব দেশে ইতোমধ্যে বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে সে দেশের সংক্রমণের ধারা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, প্রথম রোগী শনাক্ত হওয়ার এক মাসের মধ্যে ভাইরাসটি ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশেও এক মাস হয়ে গেছে। অর্থাৎ গভীর সংকটের মুখোমুখি দেশ।

এদিকে, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় যে ১১২ রোগী শনাক্ত করা হয়েছে, তার মধ্যে ৬২ জনই ঢাকার বাসিন্দা। এ ছাড়া ১৩ জন নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা। বাকিরা দেশের অন্যান্য স্থানের। সবমিলিয়ে শুধু ঢাকায় এখন পর্যন্ত ১৯১ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জে ৫৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে আরো একজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত ব্যক্তি এক জন পুরুষ ও তার বয়স ৬০ বছর। এ নিয়ে দেশে মোট মৃত্যুবরণ করেছেন ২১ জন। আর এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৩৩ জন।

নারায়ণগঞ্জকে ‘হটস্পট’ হিসেবে চিহ্নিত


নারায়ণগঞ্জকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক ড. মীরাজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। আজ বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত করোনা বিষয়ক বিশেষ বুলেটিনে তিনি এ কথা জানান।

ড. মীরাজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ঢাকায়। এরপরেই অবস্থান করছে নারায়ণগঞ্জ। তাই জেলাটিকে ইতোমধ্যে করোনা সংক্রমণের একটি হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের বিষয়ে বিশেষ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন জেলায় যেসব রোগী শনাক্ত হচ্ছে, তাদের অধিকাংশই পূর্বে সংক্রমিত হয়েছে এমন এলাকা থেকে আসছে। এই সংক্রমণকে ক্লাস্টার (এক জায়গায় একসঙ্গে কয়েকজন আক্রান্ত) বলা হয়। অর্থাৎ সেই এলাকা থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ছড়াচ্ছে।

সম্প্রতি দেশে যত সংক্রমণ হচ্ছে সেগুলোর দিকে তাকালে দেখা যায়, অধিকাংশই নারায়ণগঞ্জ থেকে অন্য এলাকায় গেছেন। পাশাপাশি তাদের থেকে অন্যরাও সংক্রমিত হচ্ছেন। তাই নারায়ণগঞ্জকে আলাদা করা হয়েছে।

সবাইকে ঘরে থাকতে অনুরোধ জানিয়ে আইইডিসিআর পরিচালক বলেন, এই মুহূর্তে সবার ঘরে থাকা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ভাইরাসটি এখন ক্লাস্টারের মাধ্যমে ছড়াচ্ছে।

পুরো দেশের মধ্যে করোনা সংক্রমণের ভয়াবহ ঝুঁকির তালিকায় রয়েছে নারায়ণগঞ্জ। সেখানে ইতোমধ্যে ৫৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। মৃত্যুবরণ করেছেন বেশ কয়েকজন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছেন ১৩ জন।

মসজিদের খাদেম করোনা আক্রান্ত, এলাকা লকডাউন



রাজধানীর রায়েরবাজারের শহীদ বুদ্ধিজীবী জামে মসজিদের এক খাদেম প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করার পর ওই মসজিদের আশপাশের এলাকা অবরুদ্ধ করা হয়েছে।
এ তথ্য নিশ্চিত করে ঢাকা মহানগর পুলিশের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী কমিশনার রৌশনুল হক সৈকত গণমাধ্যমকে জানান, ওই খাদেম বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। নমুনা পরীক্ষার পর তার শরীরে করোনাভাইরাসে অস্তিত্ব পাওয়া যায়। আইইডিসিআর থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করার পর ওই মসজিদ সংলগ্ন এলাকা লকডাউন করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, ইতোমধ্যে ওই মসজিদের ইমামসহ সকলকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। জনস্বার্থে এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। কেউ যেন জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হয়, সে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মদ হোসেন খোকন জানান, ওই মসজিদের ভেতর দুই জন খাদেম থাকতেন। তাদেরই একজন করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন। পুলিশ ইতোমধ্যে ওই এলাকা লকডাউন করেছে।

বাংলাদেশে চিকিৎসক পাঠাচ্ছে চীন, প্রধানমন্ত্রীর ধন্যবাদ


করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সম্প্রতি বাংলাদেশকে কিট, মাস্ক, পিপিই, থার্মোমিটারসহ বিপুল পরিমাণ মেডিকেল সামগ্রী পাঠিয়েছে চীন সরকার। এবার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ১৫ জন চিকিৎসককে বাংলাদেশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি।

আজ বৃহস্পতিবার এক ভিডিও বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং।

এদিকে, করোনা মোকাবেলায় বাংলাদেশকে সহায়তা দেওয়ায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে ধন্যবাদ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে জ্যাক মা ফাউন্ডেশন ও আলিবাবার কাছেও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তিনি।

চিঠিতে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় চীনের সাফল্যের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশ ও বিশ্বের সামনে উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। সেই ধারাবাহিকতায় বিশ্বে করোনা প্রতিরোধে চীনা প্রেসিডেন্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।

এর আগে গত ২৬ মার্চ করোনা পরীক্ষার জন্য ১০ হাজার টেস্ট কিট, ১০ হাজার মেডিকেল প্রটেক্টিভ ক্লথিং, এক হাজার ইনফারেট থার্মোমিটার ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ৫০০টি কিট বাংলাদেশকে উপহার দেয় চীন সরকার।

পরদিন ২৭ মার্চ বাংলাদেশকে ৩০ হাজার কিট উপহার দিয়েছেন চীনের বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান আলিবাবার প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা। পরবর্তীতে আরো তিন লাখ মাস্ক পাঠায় জ্যাক মা ফাউন্ডেশন।

ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী: যেকোনো চিকিৎসা দিতে প্রস্তুত বেসরকারি হাসপাতাল


দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেছেন, দেশের বেসরকারি হাসপাতালগুলো প্রস্তুত। করোনাভাইরাসের কারণে যেকোনো পরিস্থিতিতে যেকোনো বিষয়ে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে তারা। আজ বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জরুরি বৈঠক শেষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

ডা. এনামুর রহমান বলেন, আমি একটি ঘোষণা দিতে চাই, আপনারা স্বাস্থ্য ও রোগ সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো বিভ্রান্তিতে থাকবেন না। বাংলাদেশের ৬৯টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আমাদের প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের অধীনে আছে। সেগুলো ২৪ ঘণ্টা খোলা এবং রোগীদের সব ধরনের রোগের চিকিৎসা দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আপনার কোনো সমস্যা হলে বা যদি মনে করেন শরীরে কোনো রোগ বাগড়া দিয়েছে তাহলে নিকটবর্তী হাসপাতালে চলে যাবেন। আপনাদের সবার চিকিৎসা নিশ্চিত করা হবে।

তিনি আরো বলেন, ভাইরাসের আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা নিশ্চিতকরণে দেশের ৬৯টি প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সরকারের সঙ্গে থেকে জনগণকে সেবা দেওয়ার জন্য বদ্ধপরিকর।

গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে আরো ১১২ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে মোট শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৩৩০ জনে। এ ছাড়া একই সময়ে আরো এক জনের মৃত্যু হয়েছে। ফলে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ২১ জনে।

আজ বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে প্রচারিত বিশেষ স্বাস্থ্য বুলেটিনে এ কথা জানানো হয়। এতে যুক্ত হয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ১১২ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত হলেন ৩৩০। এ ছাড়া নতুন এক জনের মৃত্যু নিয়ে মোট ২১ জন মারা গেলেন।

Wednesday, April 8, 2020

করোনা: একদল তরুণের ভ্রাম্যমাণ ‘ফ্রি সবজি বাজার’


করোনাভাইরাসের কারণে দেশব্যাপী সাধারণ ছুটি চলায় বেকার হয়ে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষজন। তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসছেন অনেকেই। কেউ আর্থিক সাহায্য করছেন আবার কেউ চাল,ডাল,তেল,আলুসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী উপহার দিচ্ছেন। তবে কেউ কাঁচাবাজার কিনে দিচ্ছেন না।

ফলে অনেকে শুধু ডাল-ভাত খেয়ে বেঁচে আছেন। তাই এ সংকট মোকাবেলায় এগিয়ে এলেন চট্টগ্রামের একদল তরুণ। তারা নগরীর চান্দগাঁও এলাকায় ভ্রাম্যমাণ ফ্রি সবজির বাজার চালু করেছেন। এখান থেকে প্রতিদিন একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুই ধরনের সবজি প্রয়োজন অনুযায়ী পরিমাণমতো নিতে পারবেন।

এই ভ্রাম্যমাণ বাজারে সারি সারি ভ্যান ভর্তি বিভিন্ন ধরনের সবজি সাজিয়ে রাখা হয়েছে। এসব ভ্যানে টমেটো, বাঁধাকপি, লাউসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি রয়েছে। সাধারণ মানুষ বিনামূল্যে এখান থেকে সবজি কিনতে পারছেন। গত ৪ এপ্রিল থেকে বাজারটি চালু করা হয়েছে।

এ বিষয়ে উদ্যোক্তাদের একজন চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক আরশাদুল আলম বাচ্চু বলেন, করোনার বিস্তার রোধে সবাইকে ঘরে থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তারপরও কাঁচাবাজারের জন্য মানুষের বের হতে হচ্ছে। অনেকে অসচ্ছলতার কারণে প্রয়োজনীয় নিত্যপণ্য কিনতে পারছেন না।

তাদের জন্যই মূলত এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিদিন পাঁচটি ভ্যানে করে সবজি বিতরণ করা হচ্ছে। প্রতিটি ভ্যানে ১০০ কেজি করে সবজি আছে। সবমিলিয়ে দৈনিক ৫০০ কেজি সবজি বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে।

বাংলাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ৫৪ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে সংক্রমণের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ২১৮ জনে। এ ছাড়া মৃত্যুবরণ করেছেন আরো ৩ জন। মোট মৃত্যু হয়েছে ২০ জনের। এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৩৩ জন। আর চট্টগ্রামে দুই জনের শরীরে করোনা শনাক্ত করা হয়েছে।

পলিথিন পরেই চিকিৎসা দিচ্ছেন বাংলাদেশের ডাক্তার!


প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) আতঙ্কে সারা বিশ্বের মানুষ যখন ঘরে বসে আছে, তখন সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা। আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থার অভাবে সংক্রমিত হচ্ছেন নিজেরাই। হারাচ্ছেন জীবনও। তারপরও যুদ্ধের ময়দান ছেড়ে পালাননি এসব বীর যোদ্ধা।

বাংলাদেশেও কোভিড-১৯ ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিলে সুরক্ষা সামগ্রীর সংকটে পড়েন চিকিৎসকরা। তবে থেমে যাননি তারা। পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়াই করোনাভাইসের উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের দিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসা সেবা। অনেক হাসপাতালে চিকিৎসকরা পারসোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্টের (পিপিই) পরিবর্তে ব্যবহার করছেন রেইনেকোট। অনেক জায়গায় মুখে শুধুই ব্যবহার করা হচ্ছে সার্জিক্যাল মাস্ক। তেমনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের চিকিৎসকরা ফেস শিল্ডের পরিবর্তে ব্যবহার করছেন পলিথিন দিয়ে বানানো প্রটেকশন।

বুধবার আমির মোহাম্মদ নামের এক ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিএসএমএমইউ হাসাপাতালের চিকিৎসকদের ছবি শেয়ার দিয়ে বলেন, হ্যাঁ, এটা বাংলাদেশের ডাক্তারদের ছবি। কোভিড-১৯ ভাইরাসের চিকিৎসা দিতে গিয়ে ফেস শিল্ডের সংকটে পড়েন বিএসএএমইউ হাসপাতালের চিকিৎসকরা। তবে তারা থেমে থাকেননি। নিজেরাই চকবাজার থেকে পলিথিন কিনে এনে বানিয়ে নিয়েছেন ৭০০ ফেস শিল্ড। এ প্রটেকশন নিয়েই দিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসা সেবা।

তিনি আরো বলেন, দেশের এমন পরিস্থিতিতে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাওয়া এসব মহান ডাক্তারদের অনেকে সমালোচনা করেছেন। এবার একটু দাঁড়িয়ে তাদের স্যালুট জানান।

প্রসঙ্গত, দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে আতঙ্কে অনেক হাসপাতালে সাধারণ রোগে আক্রান্ত রোগীদেরও চিকিৎসা সেবা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়। এমনকি চিকিৎসার অভাবে অনেক রোগীর মারা যাওয়ার অভিযোগও উঠে। তখন দেশজুড়ে এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠে।

দেশে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ২১৮ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ২০ জন। চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়েছেন ৩৩ জন।

করোনা: বাংলাদেশেকে যে ৮ নির্দেশনা দিলো ডব্লিউএইচও


বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের আগ্রাসন মোকাবেলায় আটটি করণীয় নির্দেশনা দিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার এ নির্দেশনা দিয়েছে সংস্থাটি। নির্দেশনার সংক্ষিপ্ত কোড ‘রেসপন্স (RESPONSE)’ উল্লেখ করেছে তারা।

এই কোডের প্রতিটি অক্ষরে একটি করে নির্দেশনা হয়েছে। প্রথমত, আর মানে রেডি হিউম্যান রিসোর্সেস। অর্থ মানবসম্পদ প্রস্তুতকরণ। ই এর মানে এক্সপান্ড ল্যাবরেটরি টেস্টিং, অর্থ ল্যাব পরীক্ষা বৃদ্ধিকরণ। এস এর মানে, সাসটেইন রোবাস্ট সার্ভিলেন্স। অর্থ সঠিক পর্যবেক্ষণ নিশ্চিতকরণ। পি এর মানে প্রায়োরিটিজ কেস ম্যানেজমেন্ট। অর্থাৎ রোগী ব্যবস্থাপনায় সবচেয়ে গুরুত্ব দিতে হবে।

ও এর মানে অর্গানাইজ হেলথ ফ্যাসিলিটিজ। অর্থ চাহিদা মোতাবেক স্বাস্থ্য সরঞ্জাম সরবরাহ করতে হবে। এন এর মানে নেটওয়ার্ক এন্ড কোঅর্ডিনেট। অর্থাৎ সুদৃঢ় যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন। এস এর মানে সিকিউর ফান্ডিং এন্ড সাপ্লাইজ। এর অর্থ সংকটের সময় পর্যাপ্ত অর্থ ও খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ থাকতে হবে। সর্বশেষ ই এর অর্থ এনসিওর ইনফেকশন কন্ট্রোল। অর্থাৎ যেখানেই কেউ আক্রান্ত হোক না কেন, তৎক্ষণাৎ চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।

ডব্লিউএইচও’র ওই নির্দেশনায় বলা হয়, গত ৫ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডব্লিউএইচও’র নির্দেশনা অনুযায়ীই বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপের ঘোষণা দেন। এ ছাড়া ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার বিশেষ একটি প্যাকেজের ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি।

আমাদের (হু) প্রত্যাশা, তিনি আমাদের নির্দেশনা মোতাবেক বাংলাদেশের নাগরিকদের এ মহামারির প্রকোপ থেকে নিরাপদ রাখতে সক্ষম হবেন।

সিলেটে করোনা আক্রান্ত চিকিৎসকের অবস্থা আশঙ্কাজনক


সিলেটে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া চিকিৎসকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে এখন সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন সেন্টার থেকে ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে।

আজ বুধবার বিষয়টি নিশ্চিত করে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) সুশান্ত কুমার মহাপাত্র বলেন, ওই চিকিৎসক স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারছেন না। গতকাল রাত থেকে তাকে অক্সিজেন দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, করোনা চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল টিমের সিনিয়র চিকিৎসকরা রোগীকে দেখে গেছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

জানা গেছে, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে নিজ বাসায় অবস্থান করছিলেন ওই চিকিৎসক। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে হঠাৎ করেই তার অতিরিক্ত শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। এরপর করোনা আইসোলেশন সেন্টারে এনে অক্সিজেন দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখা হয়েছে।

এর আগে গত ৫ এপ্রিল ওই চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হন বলে নিশ্চিত করেন সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ মণ্ডল।

আক্রান্ত চিকিৎসক সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। একই সঙ্গে নগরের ইবনে সিনা হাসপাতালে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করেন।

লকডাউন নরসিংদী


করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে এবার পুরো নরসিংদী জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করা হলো। আজ বুধবার এক জরুরি সভা শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে এই নির্দেশনা কার্যকর হবে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত লকডাউন বলবৎ থাকবে।

জেলা প্রশাসক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন বলেন, আগামীকাল থেকে নরসিংদীর কেউ অন্য কোথাও যেতে পারবে না। একই সঙ্গে অন্য জেলার কেউ নরসিংদীতে আসতে পারবে না। ঢাকা-সিলেট জাতীয় মহাসড়ক ছাড়া সকল প্রবেশ পথ বন্ধ থাকবে।

এই সময়ের মধ্যে সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, গণজমায়েত, গণপরিবহন ও জনসাধারণের চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে জরুরি সেবা, খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ, চিকিৎসা এবং গণমাধ্যম এর আওতাভুক্ত নয়।

যারা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।

এর আগে নারায়ণগঞ্জ ও টাঙ্গাইল জেলাকেও লকডাউন করে দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম ও বৃহত্তর ফরিদপুরের সব প্রবেশ পথ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

ঝুঁকিতে ঢাকা, ১২৩ করোনা রোগী শনাক্ত


দেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমণ ও মৃতের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত করা হয়েছে রাজধানী ঢাকায়। এখন পর্যন্ত শুধু ঢাকায় ১২৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে।

আজ বুধবার এ তথ্য জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. সানিয়া তাহমিনা ঝোরা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরো ৫৪ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে শুধু ঢাকাতেই আছেন ৩৯ জন। এ ছাড়া ঢাকার পার্শ্ববর্তী উপজেলার একজন। বাকি ১৪ জন অন্যান্য জেলার।

সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত শুধু ঢাকায় কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত করা হয়েছে ১২৩ জন। আর পুরো দেশে এ সংখ্যাটা ২১৮ জন।

এদিকে, গতকাল পর্যন্ত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশের ১৭টি জেলায় করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ১২৩ জন শনাক্ত করা হয়েছে রাজধানী ঢাকায়। এরপরেই নারায়ণগঞ্জে ৩৮ জনের শরীরে কোভিড-১৯ শনাক্ত করা হয়েছে।

এ ছাড়া মাদারীপুরে ১১, চট্টগ্রামে ৩, মানিকগঞ্জে ৩, কুমিল্লায় ২, গাইবান্ধায় ৫, চুয়াডাঙ্গায় ১, গাজীপুরে ১, জামালপুরে ৩, শরীয়তপুরে ১, কক্সবাজারে ১, নরসিংদীতে ১, মৌলভীবাজারে ১, সিলেটে ১, রংপুরে ১, টাঙ্গাইলে ১ এবং ঢাকার বাইরে চার উপজেলায় ৬ জন কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকার বাইরে যে ১৪ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে, তাদের বিস্তারিত তথ্য আইইডিসিআর থেকে আজ প্রকাশ করা হয়নি।

শবেবরাত: কবরস্থান-মাজারে না যেয়ে বিশেষ দোয়ার আহ্বান


পবিত্র শবেবরাতের রাতে কবরস্থান ও মাজারে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন (ইফা)। সেইসঙ্গে ঘরে ইবাদত-বন্দেগি করে করোনাভাইরাসের কবল থেকে দেশ ও বিশ্বকে রক্ষায় মহান আল্লাহর দরবারে বিশেষ দোয়া করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

আজ বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এ সংক্রান্ত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়েছে।

ইফার মহাপরিচালক আনিস মাহমুদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৪ শাবান, ৯ এপ্রিল) দিবাগত রাতে সারাদেশে পবিত্র শবেবরাত পালিত হবে।

এ বিষয়ে আগেই এক বিজ্ঞপ্তিতে শবেবরাতের ইবাদত-বন্দেগি বাসায় করার আহ্বান জানানো হয়েছে। কারণ করোনাভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে ইতোমধ্যে মসজিদে জামাতে নামাজ এক প্রকার নিষিদ্ধ এবং সকল প্রকার গণজমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

ইফার বিজ্ঞপ্তিতে দেশের আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখ, খতিব, ঈমাম, মুয়াজ্জিন, মাদরাসার অধ্যক্ষ ও শিক্ষকসহ সব ধর্মপ্রাণ মুসলমানকে প্রিয় মাতৃভূমি, মুসলিম উম্মাহ তথা গোটা বিশ্বকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে মহান আল্লাহর দরবারে বিশেষ দোয়া করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, পবিত্র শবেবরাতে জিয়ারতের জন্য কবরস্থান ও মাজারে অনেক লোকের সমাগম হয়। তাছাড়া কবরস্থান ও মাজারের ভেতর ও বাইরে অনেক ভিক্ষুক, অসহায়, অসচ্ছল, প্রতিবন্ধী ও রোগাক্রান্ত ব্যক্তি সাহায্যের জন্য সমবেত হয়। ফলে করোনাভাইরাস ব্যাপক হারে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সুতরাং শবেবরাতে কবর জিয়ারতের উদ্দেশ্যে কবরস্থানে না গিয়ে নিজ নিজ বাসস্থানে থেকে মৃত আত্মীয়-স্বজনের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করার জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বিশেষভাবে আহ্বান জানানা যাচ্ছে।

সেইসঙ্গে কবরস্থান ও মাজারের গেট বন্ধ রাখাসহ কবরস্থানের ভেতর ও বাইরে কোনো জনসমাগম যাতে না হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।

এ ছাড়া বিজ্ঞপ্তিতে করোনাভাইরাস নিয়ে গুজব ছড়ানো ও গুজবে বিশ্বাস করা থেকে বিরত থাকার জন্যও সবার প্রতি বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে।

দেশে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ২১৮ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ২০ জন। চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়েছেন ৩৩ জন।

এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত লকডাউনে থাকতে পারে মুম্বাই


ভারতের অর্থনীতির জন্য মুম্বাই শহর কতোটা গুরুত্বপূর্ণ, তা না বললেও হয়। কিন্তু করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে আপাতত লকডাউন করে রাখা হয়েছে এই শহর। তিন সপ্তাহের যে লকডাউন ভারত সরকার ঘোষণা করেছে, তা শেষ হবে আগামী সপ্তাহে। কিন্তু তার আগেই ঘোষণা আসতে পারে আরো দীর্ঘ লকডাউনের। জানা যাচ্ছে যে, এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত বন্ধ থাকতে পারে ভারতের অর্থনীতির সবচেয়ে বড় চাকা।

মুম্বাইয়ের প্রশাসন আপাতত পুরোপুরি মনোযোগ দিয়ে করোনা ভাইরাসের লক্ষণ প্রকাশ করা ব্যক্তিদের টেস্ট করার দিকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা মেনে, যতো বেশি সম্ভব টেস্ট করার চেষ্টা করে যাচ্ছে শহরটি।

মুম্বাইয়ে দুই কোটির বেশি মানুষ বাস করেন। এর মধ্যে প্রচুর লোক আছেন, যারা আসলে অন্য শহরের বাসিন্দা। কিন্তু জীবিকার তাগিদে তাদের মুম্বাইয়ে থাকতে হয়। শহরটি হয়ে উঠেছে ভারতের করোনা ভাইরাস ছড়ানোর মূলকন্দ্র।

সর্বশেষ সরকারি তথ্যে জানা যায়, ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৭০০-এর বেশি লোক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত বলে চিহ্নিত হয়েছেন এবং ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে একশজনের বেশি মুম্বাইয়ের বাস করেন। শহরটিতে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ দিন দিন বেড়েই চলছে। এ কারণেই মূলত আরো বেশি সময় লকডাউনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

মুম্বাইয়ে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বস্তিগুলোর একটি। আবার মুম্বাইয়কে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে পৃথিবীর অন্যতম বড় চলচ্চিত্র শিল্প। অদ্ভুত বৈপরীত্য নিয়েই চলছিলো মুম্বাইয়ের জীবন। কিন্তু করোনা ভাইরাসের আঘাতে বস্তির লোকজন যেমন, তেমনি চলচ্চিত্রের শিল্পীদের জীবনও পড়ে গেছে ঝুঁকির মুখে।

Sunday, April 5, 2020

করোনার ওষুধ তৈরি করছে বেক্সিমকো-বিকন


করোনাভাইরাসের মহামারি ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে বিশ্বব্যাপী কিছু ওষুধের নাম ব্যাপকভাবে আলোচনায় এসেছে। যদিও সেগুলোর পূর্ণ কার্যকারিতা এখনো প্রমাণ হয়নি। তবে কেউ বলছেন করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে ওষুধগুলো ভালো কাজ করছে। আবার কেউ কেউ বলছেন, এগুলোর বেশ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

তবে বাংলাদেশের অন্যতম ওষুধ কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস ও বিকন ফার্মা বলছে, সরকারের ওষুধ প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে তারা একটি ছাড়া আলোচিত সব ওষুধের উপাদান এনে মজুদ করেছে এবং ওষুধও তৈরি করে ফেলেছে। যে ওষুধের কার্যকারিতা প্রমাণ হবে এবং অথবা সরকার চাইবে সেটাই তারা উৎপাদন করে বাজারজাত করবে।

তবে বেক্সিমকো ও বিকনের বাইরেও দুই একটি কোম্পানি ওষুধগুলো তৈরি করতে ওষুধ প্রশাসনের অনুমোদন নিয়েছে বলে জানা গেছে।

করোনাভাইরাস সংক্রান্ত চিকিৎসায় একটি ওষুধের নাম বেশ আলোচনায় রয়েছে। সেটি হলো জাপানের ফুজিফিল্মের সহযোগী প্রতিষ্ঠান তোয়ামা কেমিক্যাল। ওষুধটির জেনেরিক নাম ফ্যাভিপিরাভির। যার ব্র্যান্ড নাম অ্যাভিগান। ইনফ্লুয়েঞ্জার চিকিৎসার জন্য ওষুধটি উৎপাদন করে কোম্পানিটি।

ওষুধটির নাম ব্যাপক আলোচনায় আসার অন্যতম কারণ হলো- চীন করোনা রোগীদের ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করে বেশ ফল পেয়েছে বলে দাবি করেছে। তবে চীনের পার্শ্ববর্তী দেশ দক্ষিণ কোরিয়া বলছে, এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

হংকংভিত্তিক গণমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট গতকাল শনিবার এক প্রতিবেদনে জানায়, সম্প্রতি চীনের ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনলজি ডেভেলপমেন্টের পরিচালক ঝ্যাং জিনমিন বলেন, তাদের দুটি মেডিকেল ইনস্টিটিউশন ফ্যাভিপিরাভির নিয়ে পরীক্ষা চালায়। তাতে দেখা যায়, করোনাভাইরাসজনিত কিছু লক্ষণ- যেমন নিউমোনিয়া- কমাতে কার্যকর ভূমিকা পালন করছে ওষুধটি। এর বিশেষ কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বলেও জানান তিনি।

তবে একই গণমাধ্যম জানায়, দক্ষিণ কোরিয়ার বিজ্ঞানীরা বলছেন, ফ্যাভিপিরাভিরের বড় ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। যা মৃত্যুও ঘটাতে পারে। এর পরিবর্তে দেশটির খাদ্য ও নিরাপদ ওষুধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় মার্কিন কোম্পানি জাইলিড সায়েন্স উদ্ভাবিত রেমডেসিভির নামের ওষুধটি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। ইবোলা ভাইরাসের চিকিৎসার জন্য ওষুধটি তৈরি করা হয়েছিল।

তবে জাপানি ওষুধ অ্যাভিগান নিয়ে বেশ আলোচনা হলেও দেশটি এখনো করোনার চিকিৎসায় এর অনুমোদন দেয়নি। বরং তারা সেটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে। কয়েকদিন আগে জাপানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, ওষুধটি ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে অন্তত ৩০টি দেশের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে। তাদের সরকারও চিন্তা-ভাবনা করছে, যাতে অনুমতি ছাড়াই কেউ চাইলে ওষুধটি উৎপাদন ও বাজারজাত করতে পারে।

তবে বেক্সিমকো ফার্মার প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা রাব্বুর রেজা বলছেন, করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় সবচেয়ে কার্যকর হতে পারে ইভারমেকটিন ওষুধ। যেটা বিশ্বজুড়ে বিদ্যমান। ওষুধটি সস্তা ও সহজলভ্য বলেও জানান তিনি।

দুই দিন আগে অস্ট্রেলিয়ার এবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্বে ইভারমেকটিন ওষুধ নিয়ে গবেষণা করা হয়েছে। গবেষকদের দাবি, প্রচলিত পরজীবী-বিরোধী ওষুধ ইভারমেকটিন প্রয়োগ করে তারা সফলতা পেয়েছেন। এর মাত্র একটি ডোজেই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ধ্বংস হচ্ছে করোনাভাইরাস। তবে সেটা ল্যাবে প্রমাণ করতে পেরেছেন। পর্যাপ্ত অর্থ পেলে তারা এখন একটি সমন্বয় তৈরি করতে চান, যা মানব শরীরে প্রয়োগ করা সম্ভব হবে।

এ ব্যাপারে ক্যান্সারের ওষুধ তৈরি করে আলোচনায় আসা বিকন ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ এমদাদুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, তারা ইতোমধ্যে ফ্যাভিপিরাভির ওষুধটি তৈরি করে সরকারের ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরকে দিয়েছেন। ওষুধ প্রশাসনের পরীক্ষায় কার্যকারিতা প্রমাণ হলে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে যাবেন তারা।

তিনি জানান, মূলত ইবোলা ভাইরাসের চিকিৎসার ওষুধটি উদ্ভাবন করেছিল ফুজিফিল্ম। চীন দাবি করেছে, তারা সেটি প্রয়োগ করে ভালো ফল পেয়েছে। সে কারণেই চীন থেকে এ সংক্রান্ত উপাদান আনা হয়েছে।

অন্যদিকে, বেক্সিমকো ফার্মার উল্লিখিত কর্মকর্তা বলেন, করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নানা ওষুধ পরীক্ষা করছে। আমরা রেমডেসিভির বাদে সবগুলোই তৈরি করে মজুত করছি। যে ওষুধের কার্যকারিতা প্রমাণ হবে, সরকার অনুমোদন দিলে আমরা সে ওষুধটিই উৎপাদন করে সরকারকে সরবরাহ করতে পারব।

তিনি জানান, ইভারমেকটিনের কাঁচামালও আনা হচ্ছে এবং এটিও তৈরি করা হবে। 

গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। আজ রোববারের তথ্য অনুযায়ী এ পর্যন্ত দেশে মোট ৮৮ জনকে করোনা রোগী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫৫ জন সুস্থ হয়েছেন। মারা গেছে ৯ জন।

কী আছে প্রধানমন্ত্রীর ৫ প্যাকেজে


করোনাভাইরাসে সৃষ্ট ক্ষতি মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। এর মধ্যে আছে নতুন একটিসহ মোট পাঁচটি প্যাকেজ, যার মাধ্যমে বিভিন্ন মাত্রায় আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে। কী আছে ৫ প্যাকেজে?

শিল্প ও সার্ভিস সেক্টরের জন্য

ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সার্ভিস সেক্টরের প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেওয়া হবে ওয়ার্ক ক্যাপিটাল সুবিধা। এজন্য ৩০ হাজার কোটি টাকার একটি ঋণ সুবিধা প্রণয়ন করা হবে দ্রুত সময়ের মধ্যে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ওয়ার্ক ক্যাপিটাল বাবদ ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানকে নিজস্ব তহবিল থেকে ঋণ দেবে, যার সুদের হার হবে ৯ শতাংশ। সেখান থেকে ৪ শতাংশ সুদ দেবে ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠান বাকি ৫ শতাংশ ভর্তুকি হিসেবে ওই ব্যাংককে প্রদান করবে সরকার।

ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য

স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়া হবে ক্ষুদ্র (কুটির শিল্পসহ) ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে। এ লক্ষ্যে ২০ হাজার কোটি টাকার একটি ঋণ সুবিধা প্রণয়ন করা হবে। ব্যাংক-ক্লায়েন্ট রিলেশনসের ভিত্তিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ঋণ দেবে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে। এক্ষেত্রেও একই নিয়ম- সুদের ৪ শতাংশ দেবে প্রতিষ্ঠান এবং বাকি ৫ শতাংশ দেবে সরকার।

বৃদ্ধি করা হবে ইডিএফের আকার

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ফান্ডের (ইডিএফ) বর্তমান আকার ৩.৫ বিলিয়ন ডলার। এটাকে উন্নীত করা হবে ৫ বিলিয়ন ডলারে। এর ফলে অতিরিক্ত ১২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা যুক্ত হবে এই তহবিলে। সেইসঙ্গে ইডিএফের বর্তমানে সুদের হার ২.৭৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশে নিয়ে আসা হবে।

নতুন ঋণ সুবিধা

প্রি-শিপমেন্ট ক্রেডিট রিফাইন্যান্স স্কিম নামে ৫ হাজার কোটি টাকার একটি নতুন ঋণ সুবিধা চালু করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখান থেকে ঋণ দেওয়া হবে ৭ শতাংশ সুদে।

আপৎকালীন প্রণোদনা

এই প্যাকেজটি পূর্বেই ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। রফতানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে এই প্যাকেজে থাকবে ৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল।

‘এমন মানুষের জন্য কবর খুঁড়ছি, যারা এখনও মারাই যায়নি’


করোনাভাইরাসের কারণে মৃতদের শেষকৃত্যও করতে হচ্ছে অনেক সাবধানে। এতে সময়ও লাগছে বেশি। স্পেন, ফ্রান্স ও ইতালিসহ অনেক দেশের মর্গ লাশে ভর্তি হয়ে আছে। এসব দেশের সৎকারকর্মীদের শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে গিয়ে নাভিশ্বাস অবস্থা। অনেক জায়গায় আগাম কবর খুঁড়ে রাখা হচ্ছে। এর মধ্যে অন্যতম ব্রাজিল, যুক্তরাজ্য।

লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে ভয়াবহতা বাড়ার আশঙ্কায় আগাম প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের সবচেয়ে বড় সমাধিক্ষেত্র সাওপাওলোর ভিলা ফারমোসা সিমেট্রিতে আগে থেকেই খুঁড়ে রাখা হচ্ছে কবর।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্রাজিলের মতো একই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে যুক্তরাজ্যে। দেশটির কর্নওয়াল এলাকায় অ্যাগনেস সেমিট্রিতে সৎকারকর্মীরা আগে থেকেই খুঁড়ে রাখছেন কবর।

সেখানে কর্মরত এক সৎকারকর্মী ক্লাইভ কালবার বলেন, এখানে আমি কবর খুঁড়ে থাকি এবং সবকিছুর দেখভাল করে থাকি। দুর্ভাগ্যবশত কাজটি আমাদের করতে হয় জীবিকার তাগিদেই।

বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, অনেকেই ভাবছেন তারা এই মহামারি থেকে পার পেয়ে যাবেন। এমন ভাবা উচিত হবে না। মানুষ সবসময় বেঁচে থাকার কথা ভাবে। মরার কথা কেউ ভাবে না। কিন্তু তারা জানে না কি কঠিন পরিস্থিতি তাদের জন্য অপেক্ষমান। ইতোমধ্যে অনেক স্থানে আগে থেকেই কবর খুঁড়ে রাখা হচ্ছে। আমাকেও তাই করতে হচ্ছে।

ক্লাইভ কালবার বলেন, এর আগে কখনো একজন মারা মানুষের মৃত্যুর আগে তার জন্য কবর খুঁড়ে রাখিনি। তবে এবার করতে হচ্ছে। এই কাজে আমি কিছুটা মর্মাহত। কারণ অনেকে এখনো মারাই যায়নি। কিন্তু তাদের জন্য কবর প্রস্তুত করা রাখা হয়েছে। আমার আশা এ কবরগুলো যাতে ব্যবহার না হয়।

যুক্তরাজ্যে এখন পর্যন্ত ৪১ হাজার ৯০৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে চার হাজার ৩১৩ জনের।

করোনা ভাইরাস: দিনে এক লাখ টেস্টের চেষ্টা যুক্তরাজ্যের


করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণ করতে দিনে এক লাখ সম্ভাব্য আক্রান্ত ব্যক্তিকে পরীক্ষা করার উদ্যোগ নিচ্ছে যুক্তরাজ্য। আরো বেশি লোকের টেস্ট কেনো করা যাচ্ছে না, এই প্রশ্ন তুলে যুক্তরাজ্য সরকারকে তীব্র সমালোচনার মুখে ফেলেছেন সে দেশের বিশেষজ্ঞগণ। এর মধ্যেই দেশটি জানালো যে, তারা প্রতিদিন এক লাখ লোকের টেস্ট করার মতো অবস্থায় যাওয়ার চেষ্টা করছে।

কিন্তু খুব দ্রুত এটা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে বিবিসি। যুক্তরাজ্য সরকারের এই লক্ষ্য পূরণ হতে এপ্রিল মাসের পুরোটা সময় লেগে যেতে পারে। এখন পর্যন্ত প্রতিদিন সর্বোচ্চ দশ হাজার লোকের টেস্ট করতে পারছে যুক্তরাজ্য। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে কিভাবে তারা প্রতিদিন আরো ৯০ হাজার লোকের টেস্ট করবে, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

কী কারণে যুক্তরাজ্য এখনো আরো বেশি লোকের টেস্ট করতে পারছে না, তা বিশ্লেষণ করে সংবাদ মাধ্যমটি জানিয়েছে, পুরো বিষয়টি অনেকগুলো ছোট ছোট বিষয়ের উপর নির্ভর করে। যেমন টেস্ট করার জন্য সক্ষম ল্যাবের সংখ্যা, গুণগত মানসম্পন্ন কিট ও যন্ত্রপাতি নিশ্চিত করাও এখন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সম্ভাব্য আক্রান্তের মুখের লালা ও নাকের সোয়াব সংগ্রহ করে তা যথাযথ পদ্ধতিতে ল্যাবে পরিবহন করার কাজ যথাযথভাবে করার বিষয়টিও সামনে আছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিন এক লাখের লোকের পরীক্ষা করার লক্ষ্য পূরণ করা সহজ হবে না।

জানা যাচ্ছে, এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতেই করোনা ভাইরাসের টেস্ট করা যাচ্ছে। যার সাথে আছে এনএইচএসের কয়েকটি ল্যাবও। যুক্তরাজ্য সরকার জানিয়েছে, তারা বেসরকারি খাতের সক্ষম ল্যাবগুলোকে কাজে লাগানোর চিন্তাও করছে।

যুক্তরাজ্যে ভাইরাস পরীক্ষা করার জন্য বিখ্যাত ডক্টর রুপার্ট বিয়ালি মনে করেন, প্রতিদিন এক লাখ লোকের পরীক্ষা করার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা যুক্তরাজ্যের পক্ষে সম্ভব। তিনি বলেন, লক্ষ্য পূরণ করার জন্য এনএইচএসের আরো বেশি সংখ্যক কর্মীকে কাজে লাগাতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যতো বেশি সম্ভব লোকে টেস্ট করা যাবে ততো বেশি আক্রান্ত রোগী পাওয়া যাবে। এতে তাদেরকে আইসোলেশনে রাখাও সহজ হবে এবং এই কাজ যতো দ্রুত করা যাবে, করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়াকে ততো দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।

ওয়ার্ল্ড মিটারের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, যুক্তরাজ্যে এপ্রিলের পাঁচ তারিখ পর্যন্ত ৪০ হাজারের বেশি লোককে করোনা ভাইরাসের আক্রান্ত বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। এদের মধ্যে চার হাজারের বেশি লোক মারা গেছেন এবং গুরুতর অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন প্রায় ১৬০০ লোক। সারা বিশ্বে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা এরই মধ্যে ১২ লাখ ছাড়িয়ে গেছে এবং মারা গেছেন ৬৫ হাজারের বেশি লোক।

রাশিয়ায় ‘জোরে কথা বলার’ কারণে ৫ জনকে গুলি করে হত্যা!


জোরে কথা বলার কারণে রাশিয়ার এক ব্যক্তি পাঁচজনকে গুলি করে হত্যা করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে স্থানীয় সময় শনিবার রাত ১০টার দিকে। ঘটনার পর পুলিশ সন্দেহভাজন হত্যাকারীকে আটক করেছে এবং তার বন্দুক জব্দ করেছে। কিন্তু লোকটির পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।

পুলিশ জানিয়েছে, মস্কো থেকে ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে রিয়াজান অঞ্চলের ইয়েলিৎমা নামক এক গ্রামে এই ঘটনাটি ঘটেছে। এলাকাটি বর্তমানে করোনা ভাইরাসের কারণে লকডাউন করা আছে।

তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেছেন, বাসার নিচে উচ্চস্বরে কথা বলার কারণে সন্দেহভাজন হত্যাকারী পাঁচজনের একটি গ্রুপকে সতর্ক করে। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে বাক বিতণ্ডা তৈরি হয় এবং লোকটি তার শিকার করার বন্দুক দিয়ে উপর্যুপরি গুলি করতে থাকেন।

তদন্ত কমিটি সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছে, গুলির আঘাতজনিত কারণে আক্রান্ত পাঁচজন ঘটনাস্থলেই মারা যান। তারা ছিলেন চারজন পুরুষ ও একজন নারী।

ঘটনার পরপর সন্দেহভাজন আক্রমণকারি লোকটিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং লোকটির বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ঘটনায় ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রটি জব্দ করা হয়েছে।

কাঁটাবনে বন্দি পশু-পাখির আর্তনাদ


করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) বিস্তার মোকাবেলায় কার্যত লকডাউনে রয়েছে রাজধানী ঢাকা। জরুরি স্বাস্থ্য সেবা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান ছাড়া প্রায় সবকিছুই বন্ধ রয়েছে। বাদ যায়নি শখের পশু-পাখির সবচেয়ে বড় বাজার কাঁটাবনও। বন্ধ দোকানের ভেতর খাঁচায় আটকে আছে অবলা পশু-পাখি। কিন্তু পর্যাপ্ত খাবার এবং আলো-বাতাস না পেয়ে আর্তনাদ করে যাচ্ছে পশুপাখিগুলো।

শনিবার কাঁটাবন মার্কেটের পাশে দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় পশুপাখিদের কান্নার শব্দ শুনে থমকে দাঁড়ান স্বপন দাস নামের এক ব্যক্তি। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে সে কথা জানান তিনি।

কাঁটাবন মার্কেটের একটি ছবি দিয়ে স্বপন বলেন, শনিবার বিকালে শাহবাগ থেকে ওষুধ নিয়ে বাসায় ফিরছিলেন তিনি। কাঁটাবনের পাশ দিয়ে আসার সময় এক মর্মান্তিক দৃশ্য দেখে চোখ আটকে যায় তার। তিনি দেখেন বন্ধ দোকানের ভেতর থেকে প্রচণ্ড শব্দে আর্তনাদ করছে আটকে থাকা কুকুরগুলো। এসব পশুপাখির খাওয়া-দাওয়া নেই। ছোট খোপের মধ্যে আটকে আছে তারা।

প্রাণীগুলো বাঁচবে কী করে এমন প্রশ্নও করেন তিনি।

তার এই স্ট্যাটাসে এক ব্যক্তি মন্তব্য করেন, তার বাসা এই কাঁটাবন মার্কেটের কাছে। তিনিও পশুপাখির আর্তনাদ শুনেছেন।

এসব অসহায় পশু-পাখির প্রাণ রক্ষা করতে হবে বলে মন্তব্য করেন আরেক ব্যক্তি।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান জানান, বন্দি অসহায় প্রাণিগুলোকে খাবার দেওয়ার জন্য তারা সুযোগ দিচ্ছেন। দোকান মালিকদের বলা হয়েছে দিনে অন্তত একবার যেনো দোকানের শাটার পুরো না খুলে পশু-পাখিদের খাবার দেওয়া হয়।

এ কথা স্বীকারও করেছেন সেখানকার এক দোকানদার। তিনি বলেন, পশু-পাখিদের খাবার দেওয়ার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকাল এবং সন্ধ্যায় স্বল্প সময়ের জন্য দোকান খোলার অনুমতি আছে। কিন্তু দোকান বেশিক্ষণ খোলা রাখলেই আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এসে বন্ধ করতে বলছে। ফলে পশু-পাখিদের যে সময় দেওয়া দরকার, তারা তা দিতে পারছেন না। আর এর ফলেই অসহায় পশুপাখিগুলো আর্তনাদ করছে।

Saturday, April 4, 2020

ভাইরাস নিয়ে বাসায় ঢুকছেন না তো, মনে রাখুন ১০ বিষয়


দিনে দিনে চরম সঙ্কট তৈরি করছে করোনা ভাইরাস। ইতোমধ্যেই অর্ধ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে এই মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে। চিকিৎসা নিচ্ছেন আট লাখের বেশি মানুষ। তাদের মধ্যে ৩৯ হাজারের অবস্থা সঙ্কটজনক। এই পরিস্থিতি সতর্কতা অবলম্বন ছাড়া কিছু করার নেই। বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো দেশে, যেখানে এই রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে লাগবে মাত্র একটা দিন, সেখানে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত সবচেয়ে বেশি।

এই সময়ে বাড়ির বাইরে যাওয়া অপরাধ বলে গণ্য হচ্ছে। তারপরও যদি জরুরি প্রয়োজনে যেতেই হয়, অবলম্বন করতে হবে কঠোর সতর্কতা যাতে বাইরে থেকে ভাইরাস নিয়ে আপনি বাড়িতে ঢুকে না পড়েন। এ রকম কিছু হয়ে গেলে এতোদিন ধরে বাড়িতে বন্দি থাকার সব কষ্টই পণ্ডশ্রমে পরিণত হবে। ১০টি নিয়ম মেনে চললে বাড়িতে ভাইরাস ঢুকে পড়ার আশঙ্কা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

১. একান্ত প্রয়োজনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে বাইরে যান

খাবার কেনার জন্য, ওষুধ কেনার জন্য বা এ ধরনের একান্ত প্রয়োজনে বাইরে যেতে হলে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করে বাইরে যান। নিরাপত্তা বলতে সঠিক পদ্ধতিতে সঠিক মাস্ক পরুন, গ্লাভস পরুন। চোখ-মুখ নিরাপদ থাকে এমন ব্যবস্থা নিন। এই সব ক্ষেত্রে পিপিই’র মতো পেশাদার চিকিৎসকদের উপকরণ প্রয়োজন নেই। কিন্তু যথেষ্ট নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন।

২. সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন

বাইরে গিয়ে লোকজনের সাথে আড্ডাবাজিতে মোটেও বসবেন না। আপাতত বাংলাদেশে বাসার বাইরে যে কোনো ধরনের আড্ডাবাজি অপরাধ বলে গণ্য হচ্ছে। কারণ সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে চলাফেরা করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আড্ডাবাজিতে এ ধরনের নির্দেশনা মেনে চলা সম্ভব নয়। দোকানে লাইনে দাঁড়ালে সামনে ও পেছনের লোকের সাথে দূরত্ব রেখে দাঁড়ান। অন্যদেরও একই পরামর্শ দিন।


৩. নিজস্ব ব্যাগ, ট্রলি ব্যবহার করুন

সুপারশপে বাজার করতে গেলে যে ট্রলি ব্যবহার করা হয়, আপাতত পরিহার করুন। প্রয়োজনে নিজস্ব প্লাস্টিকের ট্রলি ব্যবহার করুন। এই ধরনের ট্রলি ব্যবহার নিশ্চিত করতে না পারলে নিজস্ব বাজারের ব্যাগ ব্যবহার করুন। যা একবার ব্যবহার করে ফেলে দেওয়া সম্ভব।

৪. বাইরে থাকা অবস্থায় মুখমণ্ডলে হাত স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন

বিশেষজ্ঞরা বলছেন করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার প্রধান মাধ্যম হলো হাত। হাত দিয়ে আমরা যখন, নাক, চোখ স্পর্শ করি, হাতে জীবাণু থাকলে তখনই তা আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। সুতরাং বাইরে থাকা অবস্থায় নাকে-মুখে হাত দেওয়া মারাত্মক বিপজ্জনক। নাক-মুখ-চোখ স্পর্শ করা বাদ দিন। চুলকালে জীবাণুমুক্ত টিস্যু ব্যবহার করুন।

৫. ফোন, ব্যাগ যেখানে সেখানে রাখা বাদ দিন

বাজার করতে করতে হাতের ব্যাগটা ভারী হয়ে গেলে আমরা যেখানে সেখানে রেখে দেই। কিন্তু এই পদক্ষেপটি অত্যন্ত বাজে পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। এ ছাড়া হাতের ফোনটাও যখন তখন যেখানে সেখানে রাখার অভ্যাস আছে অনেকের। এই ধরনের অভ্যাস ত্যাগ করা অত্যন্ত জরুরি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শক্ত ও সমতল ভূমির উপর অন্তত ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের জীবাণু টিকে থাকতে পারে। আমরা যেহেতু জানি না ভাইরাস কোথায় কোথায় আছে, সুতরাং নিরাপত্তার জন্য সতর্কতা অবলম্বনের বিকল্প নেই।

৬. বাসায় ফিরেই সব কিছু জীবাণুমুক্ত করে নিন

বাজারের ব্যাগ, জুতা, জামা-কাপড় যে কোনো কিছুতে ভাইরাসের জীবাণু লেগে থাকতে পারে এবং সেখান থেকে শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। সুতরাং ভুলেও বাইরে পরা জুতা নিয়ে বাসায় ঢুকবেন না। জুতা বাসার বাইরে রাখুন এবং অবশ্যই জুতায় জীবাণুনাশক স্প্রে করুন। বাজারের ব্যাগেও জীবাণুনাশক স্প্রে করে দিন। বাসায় প্রবেশ করা মাত্র গ্লাভস ফেলে দিন, হাত ধুয়ে ফেলুন এবং জামা-কাপড় গরম পানিতে ধুয়ে ফেলুন।

৭. দরজার হাতল, বেসিনের কল নিজে ধরা থেকে বিরত থাকুন

বাজার থেকে বাসায় এসে দরজার হাতলে সরাসরি হাত রাখা থেকে বিরত থাকুন। দরজা খুলতে হলে কনুই, হাতের পিঠের দিকট ব্যাবহার করুন। প্রয়োজনে বাসার ভেতরে থাকা লোকের সহায়তা নিন। বেসিনে হাত ধোয়ার সময়ও সম্ভব হলে কনুই ব্যবহার করুন। কল ছাড়ার জন্য কনুইয়ের ব্যবহার ঝুঁকি কমিয়ে দিবে। আর যদি কলটি ঘুরিয়ে খুলতে হয়, তাহলে সেটাই করুন। কিন্তু হাত ধোয়ার সময় কলটাও ধুয়ে ফেলার কথা ভুলেও ভুলবেন না।

৮. সঙ্গে করে অন্য কাউকে নিয়ে আসার কথা ভুলে যান

রাস্তা- ঘাটে বা বাসার নিচে বন্ধুদের সাথে দেখা হলেই আমরা তাদেরকে বাসায় নিয়ে আসি। স্বাভাবিক বাংলাদেশি সংস্কৃতিতে চেনা পরিচিতদের বাসায় দাওয়াত দেওয়ার অনুশীলন খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু এখন যেহেতু সময়টাই স্বাভাবিক নয়, সেহেতু স্বাভাবিকতার চর্চা করারও সুযোগ নেই।

৯. সম্ভব হলে দ্রুত গরম পানিতে গোসল করে নিন

কুসুম গরম পানি জীবাণু ধ্বংস করে দেয়। এ ছাড়া সাবানের ব্যবহার তো আছেই। বাইরে থেকে এসে সব সতর্কতা গ্রহণের পাশাপাশি গোসলটাও করে ফেলুন এবং ব্যবহার করুন কুসুম গরমপানি। মাথায় শ্যাপ্মু করুন। শরীরের কোনো অংশে জীবাণু লেগে থাকলে গোসল করার মাধ্যমে তা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

১০. একজনের বেশি বাইরে যাবেন না

জরুরি কাজের জন্য একেকবার একেকজন বাইরে যাবেন না। বাসা থেকে একজনের বেশি লোক বাইরে যাওয়া মানেই ভাইরাস নিয়ে বাসায় ঢোকার শঙ্কা বেরে যাওয়া। একবার বাসায় ভাইরাস ঢুকে গেলে, তাতে আক্রান্ত হতে পারেন বাড়ির সকলেই। সুতরাং নিজের ভুলের কারণে যাতে পরিবারের সবাই ঝুঁকিতে না পড়ে, সে দিকে খেয়াল রাখাটা অবশ্য কর্তব্য।