Showing posts with label news. Show all posts
Showing posts with label news. Show all posts

Sunday, April 5, 2020

কী আছে প্রধানমন্ত্রীর ৫ প্যাকেজে


করোনাভাইরাসে সৃষ্ট ক্ষতি মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। এর মধ্যে আছে নতুন একটিসহ মোট পাঁচটি প্যাকেজ, যার মাধ্যমে বিভিন্ন মাত্রায় আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে। কী আছে ৫ প্যাকেজে?

শিল্প ও সার্ভিস সেক্টরের জন্য

ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সার্ভিস সেক্টরের প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেওয়া হবে ওয়ার্ক ক্যাপিটাল সুবিধা। এজন্য ৩০ হাজার কোটি টাকার একটি ঋণ সুবিধা প্রণয়ন করা হবে দ্রুত সময়ের মধ্যে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ওয়ার্ক ক্যাপিটাল বাবদ ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানকে নিজস্ব তহবিল থেকে ঋণ দেবে, যার সুদের হার হবে ৯ শতাংশ। সেখান থেকে ৪ শতাংশ সুদ দেবে ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠান বাকি ৫ শতাংশ ভর্তুকি হিসেবে ওই ব্যাংককে প্রদান করবে সরকার।

ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য

স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়া হবে ক্ষুদ্র (কুটির শিল্পসহ) ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে। এ লক্ষ্যে ২০ হাজার কোটি টাকার একটি ঋণ সুবিধা প্রণয়ন করা হবে। ব্যাংক-ক্লায়েন্ট রিলেশনসের ভিত্তিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ঋণ দেবে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে। এক্ষেত্রেও একই নিয়ম- সুদের ৪ শতাংশ দেবে প্রতিষ্ঠান এবং বাকি ৫ শতাংশ দেবে সরকার।

বৃদ্ধি করা হবে ইডিএফের আকার

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ফান্ডের (ইডিএফ) বর্তমান আকার ৩.৫ বিলিয়ন ডলার। এটাকে উন্নীত করা হবে ৫ বিলিয়ন ডলারে। এর ফলে অতিরিক্ত ১২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা যুক্ত হবে এই তহবিলে। সেইসঙ্গে ইডিএফের বর্তমানে সুদের হার ২.৭৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশে নিয়ে আসা হবে।

নতুন ঋণ সুবিধা

প্রি-শিপমেন্ট ক্রেডিট রিফাইন্যান্স স্কিম নামে ৫ হাজার কোটি টাকার একটি নতুন ঋণ সুবিধা চালু করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখান থেকে ঋণ দেওয়া হবে ৭ শতাংশ সুদে।

আপৎকালীন প্রণোদনা

এই প্যাকেজটি পূর্বেই ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। রফতানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে এই প্যাকেজে থাকবে ৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল।

‘এমন মানুষের জন্য কবর খুঁড়ছি, যারা এখনও মারাই যায়নি’


করোনাভাইরাসের কারণে মৃতদের শেষকৃত্যও করতে হচ্ছে অনেক সাবধানে। এতে সময়ও লাগছে বেশি। স্পেন, ফ্রান্স ও ইতালিসহ অনেক দেশের মর্গ লাশে ভর্তি হয়ে আছে। এসব দেশের সৎকারকর্মীদের শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে গিয়ে নাভিশ্বাস অবস্থা। অনেক জায়গায় আগাম কবর খুঁড়ে রাখা হচ্ছে। এর মধ্যে অন্যতম ব্রাজিল, যুক্তরাজ্য।

লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে ভয়াবহতা বাড়ার আশঙ্কায় আগাম প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের সবচেয়ে বড় সমাধিক্ষেত্র সাওপাওলোর ভিলা ফারমোসা সিমেট্রিতে আগে থেকেই খুঁড়ে রাখা হচ্ছে কবর।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্রাজিলের মতো একই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে যুক্তরাজ্যে। দেশটির কর্নওয়াল এলাকায় অ্যাগনেস সেমিট্রিতে সৎকারকর্মীরা আগে থেকেই খুঁড়ে রাখছেন কবর।

সেখানে কর্মরত এক সৎকারকর্মী ক্লাইভ কালবার বলেন, এখানে আমি কবর খুঁড়ে থাকি এবং সবকিছুর দেখভাল করে থাকি। দুর্ভাগ্যবশত কাজটি আমাদের করতে হয় জীবিকার তাগিদেই।

বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, অনেকেই ভাবছেন তারা এই মহামারি থেকে পার পেয়ে যাবেন। এমন ভাবা উচিত হবে না। মানুষ সবসময় বেঁচে থাকার কথা ভাবে। মরার কথা কেউ ভাবে না। কিন্তু তারা জানে না কি কঠিন পরিস্থিতি তাদের জন্য অপেক্ষমান। ইতোমধ্যে অনেক স্থানে আগে থেকেই কবর খুঁড়ে রাখা হচ্ছে। আমাকেও তাই করতে হচ্ছে।

ক্লাইভ কালবার বলেন, এর আগে কখনো একজন মারা মানুষের মৃত্যুর আগে তার জন্য কবর খুঁড়ে রাখিনি। তবে এবার করতে হচ্ছে। এই কাজে আমি কিছুটা মর্মাহত। কারণ অনেকে এখনো মারাই যায়নি। কিন্তু তাদের জন্য কবর প্রস্তুত করা রাখা হয়েছে। আমার আশা এ কবরগুলো যাতে ব্যবহার না হয়।

যুক্তরাজ্যে এখন পর্যন্ত ৪১ হাজার ৯০৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে চার হাজার ৩১৩ জনের।

করোনা ভাইরাস: দিনে এক লাখ টেস্টের চেষ্টা যুক্তরাজ্যের


করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণ করতে দিনে এক লাখ সম্ভাব্য আক্রান্ত ব্যক্তিকে পরীক্ষা করার উদ্যোগ নিচ্ছে যুক্তরাজ্য। আরো বেশি লোকের টেস্ট কেনো করা যাচ্ছে না, এই প্রশ্ন তুলে যুক্তরাজ্য সরকারকে তীব্র সমালোচনার মুখে ফেলেছেন সে দেশের বিশেষজ্ঞগণ। এর মধ্যেই দেশটি জানালো যে, তারা প্রতিদিন এক লাখ লোকের টেস্ট করার মতো অবস্থায় যাওয়ার চেষ্টা করছে।

কিন্তু খুব দ্রুত এটা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে বিবিসি। যুক্তরাজ্য সরকারের এই লক্ষ্য পূরণ হতে এপ্রিল মাসের পুরোটা সময় লেগে যেতে পারে। এখন পর্যন্ত প্রতিদিন সর্বোচ্চ দশ হাজার লোকের টেস্ট করতে পারছে যুক্তরাজ্য। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে কিভাবে তারা প্রতিদিন আরো ৯০ হাজার লোকের টেস্ট করবে, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

কী কারণে যুক্তরাজ্য এখনো আরো বেশি লোকের টেস্ট করতে পারছে না, তা বিশ্লেষণ করে সংবাদ মাধ্যমটি জানিয়েছে, পুরো বিষয়টি অনেকগুলো ছোট ছোট বিষয়ের উপর নির্ভর করে। যেমন টেস্ট করার জন্য সক্ষম ল্যাবের সংখ্যা, গুণগত মানসম্পন্ন কিট ও যন্ত্রপাতি নিশ্চিত করাও এখন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সম্ভাব্য আক্রান্তের মুখের লালা ও নাকের সোয়াব সংগ্রহ করে তা যথাযথ পদ্ধতিতে ল্যাবে পরিবহন করার কাজ যথাযথভাবে করার বিষয়টিও সামনে আছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিন এক লাখের লোকের পরীক্ষা করার লক্ষ্য পূরণ করা সহজ হবে না।

জানা যাচ্ছে, এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতেই করোনা ভাইরাসের টেস্ট করা যাচ্ছে। যার সাথে আছে এনএইচএসের কয়েকটি ল্যাবও। যুক্তরাজ্য সরকার জানিয়েছে, তারা বেসরকারি খাতের সক্ষম ল্যাবগুলোকে কাজে লাগানোর চিন্তাও করছে।

যুক্তরাজ্যে ভাইরাস পরীক্ষা করার জন্য বিখ্যাত ডক্টর রুপার্ট বিয়ালি মনে করেন, প্রতিদিন এক লাখ লোকের পরীক্ষা করার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা যুক্তরাজ্যের পক্ষে সম্ভব। তিনি বলেন, লক্ষ্য পূরণ করার জন্য এনএইচএসের আরো বেশি সংখ্যক কর্মীকে কাজে লাগাতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যতো বেশি সম্ভব লোকে টেস্ট করা যাবে ততো বেশি আক্রান্ত রোগী পাওয়া যাবে। এতে তাদেরকে আইসোলেশনে রাখাও সহজ হবে এবং এই কাজ যতো দ্রুত করা যাবে, করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়াকে ততো দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।

ওয়ার্ল্ড মিটারের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, যুক্তরাজ্যে এপ্রিলের পাঁচ তারিখ পর্যন্ত ৪০ হাজারের বেশি লোককে করোনা ভাইরাসের আক্রান্ত বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। এদের মধ্যে চার হাজারের বেশি লোক মারা গেছেন এবং গুরুতর অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন প্রায় ১৬০০ লোক। সারা বিশ্বে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা এরই মধ্যে ১২ লাখ ছাড়িয়ে গেছে এবং মারা গেছেন ৬৫ হাজারের বেশি লোক।

রাশিয়ায় ‘জোরে কথা বলার’ কারণে ৫ জনকে গুলি করে হত্যা!


জোরে কথা বলার কারণে রাশিয়ার এক ব্যক্তি পাঁচজনকে গুলি করে হত্যা করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে স্থানীয় সময় শনিবার রাত ১০টার দিকে। ঘটনার পর পুলিশ সন্দেহভাজন হত্যাকারীকে আটক করেছে এবং তার বন্দুক জব্দ করেছে। কিন্তু লোকটির পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।

পুলিশ জানিয়েছে, মস্কো থেকে ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে রিয়াজান অঞ্চলের ইয়েলিৎমা নামক এক গ্রামে এই ঘটনাটি ঘটেছে। এলাকাটি বর্তমানে করোনা ভাইরাসের কারণে লকডাউন করা আছে।

তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেছেন, বাসার নিচে উচ্চস্বরে কথা বলার কারণে সন্দেহভাজন হত্যাকারী পাঁচজনের একটি গ্রুপকে সতর্ক করে। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে বাক বিতণ্ডা তৈরি হয় এবং লোকটি তার শিকার করার বন্দুক দিয়ে উপর্যুপরি গুলি করতে থাকেন।

তদন্ত কমিটি সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছে, গুলির আঘাতজনিত কারণে আক্রান্ত পাঁচজন ঘটনাস্থলেই মারা যান। তারা ছিলেন চারজন পুরুষ ও একজন নারী।

ঘটনার পরপর সন্দেহভাজন আক্রমণকারি লোকটিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং লোকটির বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ঘটনায় ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রটি জব্দ করা হয়েছে।

কাঁটাবনে বন্দি পশু-পাখির আর্তনাদ


করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) বিস্তার মোকাবেলায় কার্যত লকডাউনে রয়েছে রাজধানী ঢাকা। জরুরি স্বাস্থ্য সেবা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান ছাড়া প্রায় সবকিছুই বন্ধ রয়েছে। বাদ যায়নি শখের পশু-পাখির সবচেয়ে বড় বাজার কাঁটাবনও। বন্ধ দোকানের ভেতর খাঁচায় আটকে আছে অবলা পশু-পাখি। কিন্তু পর্যাপ্ত খাবার এবং আলো-বাতাস না পেয়ে আর্তনাদ করে যাচ্ছে পশুপাখিগুলো।

শনিবার কাঁটাবন মার্কেটের পাশে দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় পশুপাখিদের কান্নার শব্দ শুনে থমকে দাঁড়ান স্বপন দাস নামের এক ব্যক্তি। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে সে কথা জানান তিনি।

কাঁটাবন মার্কেটের একটি ছবি দিয়ে স্বপন বলেন, শনিবার বিকালে শাহবাগ থেকে ওষুধ নিয়ে বাসায় ফিরছিলেন তিনি। কাঁটাবনের পাশ দিয়ে আসার সময় এক মর্মান্তিক দৃশ্য দেখে চোখ আটকে যায় তার। তিনি দেখেন বন্ধ দোকানের ভেতর থেকে প্রচণ্ড শব্দে আর্তনাদ করছে আটকে থাকা কুকুরগুলো। এসব পশুপাখির খাওয়া-দাওয়া নেই। ছোট খোপের মধ্যে আটকে আছে তারা।

প্রাণীগুলো বাঁচবে কী করে এমন প্রশ্নও করেন তিনি।

তার এই স্ট্যাটাসে এক ব্যক্তি মন্তব্য করেন, তার বাসা এই কাঁটাবন মার্কেটের কাছে। তিনিও পশুপাখির আর্তনাদ শুনেছেন।

এসব অসহায় পশু-পাখির প্রাণ রক্ষা করতে হবে বলে মন্তব্য করেন আরেক ব্যক্তি।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান জানান, বন্দি অসহায় প্রাণিগুলোকে খাবার দেওয়ার জন্য তারা সুযোগ দিচ্ছেন। দোকান মালিকদের বলা হয়েছে দিনে অন্তত একবার যেনো দোকানের শাটার পুরো না খুলে পশু-পাখিদের খাবার দেওয়া হয়।

এ কথা স্বীকারও করেছেন সেখানকার এক দোকানদার। তিনি বলেন, পশু-পাখিদের খাবার দেওয়ার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকাল এবং সন্ধ্যায় স্বল্প সময়ের জন্য দোকান খোলার অনুমতি আছে। কিন্তু দোকান বেশিক্ষণ খোলা রাখলেই আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এসে বন্ধ করতে বলছে। ফলে পশু-পাখিদের যে সময় দেওয়া দরকার, তারা তা দিতে পারছেন না। আর এর ফলেই অসহায় পশুপাখিগুলো আর্তনাদ করছে।

Saturday, April 4, 2020

ভাইরাস নিয়ে বাসায় ঢুকছেন না তো, মনে রাখুন ১০ বিষয়


দিনে দিনে চরম সঙ্কট তৈরি করছে করোনা ভাইরাস। ইতোমধ্যেই অর্ধ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে এই মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে। চিকিৎসা নিচ্ছেন আট লাখের বেশি মানুষ। তাদের মধ্যে ৩৯ হাজারের অবস্থা সঙ্কটজনক। এই পরিস্থিতি সতর্কতা অবলম্বন ছাড়া কিছু করার নেই। বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো দেশে, যেখানে এই রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে লাগবে মাত্র একটা দিন, সেখানে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত সবচেয়ে বেশি।

এই সময়ে বাড়ির বাইরে যাওয়া অপরাধ বলে গণ্য হচ্ছে। তারপরও যদি জরুরি প্রয়োজনে যেতেই হয়, অবলম্বন করতে হবে কঠোর সতর্কতা যাতে বাইরে থেকে ভাইরাস নিয়ে আপনি বাড়িতে ঢুকে না পড়েন। এ রকম কিছু হয়ে গেলে এতোদিন ধরে বাড়িতে বন্দি থাকার সব কষ্টই পণ্ডশ্রমে পরিণত হবে। ১০টি নিয়ম মেনে চললে বাড়িতে ভাইরাস ঢুকে পড়ার আশঙ্কা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

১. একান্ত প্রয়োজনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে বাইরে যান

খাবার কেনার জন্য, ওষুধ কেনার জন্য বা এ ধরনের একান্ত প্রয়োজনে বাইরে যেতে হলে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করে বাইরে যান। নিরাপত্তা বলতে সঠিক পদ্ধতিতে সঠিক মাস্ক পরুন, গ্লাভস পরুন। চোখ-মুখ নিরাপদ থাকে এমন ব্যবস্থা নিন। এই সব ক্ষেত্রে পিপিই’র মতো পেশাদার চিকিৎসকদের উপকরণ প্রয়োজন নেই। কিন্তু যথেষ্ট নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন।

২. সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন

বাইরে গিয়ে লোকজনের সাথে আড্ডাবাজিতে মোটেও বসবেন না। আপাতত বাংলাদেশে বাসার বাইরে যে কোনো ধরনের আড্ডাবাজি অপরাধ বলে গণ্য হচ্ছে। কারণ সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে চলাফেরা করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আড্ডাবাজিতে এ ধরনের নির্দেশনা মেনে চলা সম্ভব নয়। দোকানে লাইনে দাঁড়ালে সামনে ও পেছনের লোকের সাথে দূরত্ব রেখে দাঁড়ান। অন্যদেরও একই পরামর্শ দিন।


৩. নিজস্ব ব্যাগ, ট্রলি ব্যবহার করুন

সুপারশপে বাজার করতে গেলে যে ট্রলি ব্যবহার করা হয়, আপাতত পরিহার করুন। প্রয়োজনে নিজস্ব প্লাস্টিকের ট্রলি ব্যবহার করুন। এই ধরনের ট্রলি ব্যবহার নিশ্চিত করতে না পারলে নিজস্ব বাজারের ব্যাগ ব্যবহার করুন। যা একবার ব্যবহার করে ফেলে দেওয়া সম্ভব।

৪. বাইরে থাকা অবস্থায় মুখমণ্ডলে হাত স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন

বিশেষজ্ঞরা বলছেন করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার প্রধান মাধ্যম হলো হাত। হাত দিয়ে আমরা যখন, নাক, চোখ স্পর্শ করি, হাতে জীবাণু থাকলে তখনই তা আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। সুতরাং বাইরে থাকা অবস্থায় নাকে-মুখে হাত দেওয়া মারাত্মক বিপজ্জনক। নাক-মুখ-চোখ স্পর্শ করা বাদ দিন। চুলকালে জীবাণুমুক্ত টিস্যু ব্যবহার করুন।

৫. ফোন, ব্যাগ যেখানে সেখানে রাখা বাদ দিন

বাজার করতে করতে হাতের ব্যাগটা ভারী হয়ে গেলে আমরা যেখানে সেখানে রেখে দেই। কিন্তু এই পদক্ষেপটি অত্যন্ত বাজে পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। এ ছাড়া হাতের ফোনটাও যখন তখন যেখানে সেখানে রাখার অভ্যাস আছে অনেকের। এই ধরনের অভ্যাস ত্যাগ করা অত্যন্ত জরুরি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শক্ত ও সমতল ভূমির উপর অন্তত ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের জীবাণু টিকে থাকতে পারে। আমরা যেহেতু জানি না ভাইরাস কোথায় কোথায় আছে, সুতরাং নিরাপত্তার জন্য সতর্কতা অবলম্বনের বিকল্প নেই।

৬. বাসায় ফিরেই সব কিছু জীবাণুমুক্ত করে নিন

বাজারের ব্যাগ, জুতা, জামা-কাপড় যে কোনো কিছুতে ভাইরাসের জীবাণু লেগে থাকতে পারে এবং সেখান থেকে শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। সুতরাং ভুলেও বাইরে পরা জুতা নিয়ে বাসায় ঢুকবেন না। জুতা বাসার বাইরে রাখুন এবং অবশ্যই জুতায় জীবাণুনাশক স্প্রে করুন। বাজারের ব্যাগেও জীবাণুনাশক স্প্রে করে দিন। বাসায় প্রবেশ করা মাত্র গ্লাভস ফেলে দিন, হাত ধুয়ে ফেলুন এবং জামা-কাপড় গরম পানিতে ধুয়ে ফেলুন।

৭. দরজার হাতল, বেসিনের কল নিজে ধরা থেকে বিরত থাকুন

বাজার থেকে বাসায় এসে দরজার হাতলে সরাসরি হাত রাখা থেকে বিরত থাকুন। দরজা খুলতে হলে কনুই, হাতের পিঠের দিকট ব্যাবহার করুন। প্রয়োজনে বাসার ভেতরে থাকা লোকের সহায়তা নিন। বেসিনে হাত ধোয়ার সময়ও সম্ভব হলে কনুই ব্যবহার করুন। কল ছাড়ার জন্য কনুইয়ের ব্যবহার ঝুঁকি কমিয়ে দিবে। আর যদি কলটি ঘুরিয়ে খুলতে হয়, তাহলে সেটাই করুন। কিন্তু হাত ধোয়ার সময় কলটাও ধুয়ে ফেলার কথা ভুলেও ভুলবেন না।

৮. সঙ্গে করে অন্য কাউকে নিয়ে আসার কথা ভুলে যান

রাস্তা- ঘাটে বা বাসার নিচে বন্ধুদের সাথে দেখা হলেই আমরা তাদেরকে বাসায় নিয়ে আসি। স্বাভাবিক বাংলাদেশি সংস্কৃতিতে চেনা পরিচিতদের বাসায় দাওয়াত দেওয়ার অনুশীলন খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু এখন যেহেতু সময়টাই স্বাভাবিক নয়, সেহেতু স্বাভাবিকতার চর্চা করারও সুযোগ নেই।

৯. সম্ভব হলে দ্রুত গরম পানিতে গোসল করে নিন

কুসুম গরম পানি জীবাণু ধ্বংস করে দেয়। এ ছাড়া সাবানের ব্যবহার তো আছেই। বাইরে থেকে এসে সব সতর্কতা গ্রহণের পাশাপাশি গোসলটাও করে ফেলুন এবং ব্যবহার করুন কুসুম গরমপানি। মাথায় শ্যাপ্মু করুন। শরীরের কোনো অংশে জীবাণু লেগে থাকলে গোসল করার মাধ্যমে তা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

১০. একজনের বেশি বাইরে যাবেন না

জরুরি কাজের জন্য একেকবার একেকজন বাইরে যাবেন না। বাসা থেকে একজনের বেশি লোক বাইরে যাওয়া মানেই ভাইরাস নিয়ে বাসায় ঢোকার শঙ্কা বেরে যাওয়া। একবার বাসায় ভাইরাস ঢুকে গেলে, তাতে আক্রান্ত হতে পারেন বাড়ির সকলেই। সুতরাং নিজের ভুলের কারণে যাতে পরিবারের সবাই ঝুঁকিতে না পড়ে, সে দিকে খেয়াল রাখাটা অবশ্য কর্তব্য।

যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কাল হলো সেই সাড়ে ৭ লাখ মানুষ!


নোভেল করোনাভাইরাসের উৎপত্তি চীনে হলেও সবচেয়ে ভয়াল থাবাটি পড়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা দুই লাখ ৭৭ হাজার ৫২২। যা বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ। মৃত্যু হয়েছে সাত হাজার ৪০৩ জনের। আর এ অবস্থার জন্য চীন থেকে আসা সাত লক্ষ মানুষকে দায়ী করছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাভেল ডেটা।

ট্রাভেল ডেটা বলছে, করোনাভাইরাসের ক্রান্তিকাল গত ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে তিন দশমিক চার মিলিয়ন (৩৪ লক্ষ) মানুষ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছে। যার সিংহভাগ ছিলো চীন, ইতালি, স্পেন ও ব্রিটেনের মানুষ।

ডিসেম্বরে চীনে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আগেই সেখান থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। কিন্তু তার আগেই সেখান থেকে ৭ লাখ ৫৯ হাজার ৪৯৩ জন উত্তর আমেরিকার দেশটিতে প্রবেশ করে।

ইতালি থেকেও প্রায় ৩ লাখ ৪৩ হাজার ৪০২ জন মানুষ যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছে গত ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়ে। স্পেন থেকে আসা এ সংখ্যা ৪ লাখ ১৮ হাজার ৮৪৮ জন। সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ এসেছে ব্রিটেন থেকে। সংখ্যাটি এক দশমিক নয় মিলিয়ন (১৯ লক্ষ)।


যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অন্য দেশ থেকে আসা লোকজনের মধ্যে ঠিক কতজন করোনায় আক্রান্ত ছিলো তা নির্ণয় করা খুব কঠিন। তবে তাদের অনেকের দেহে ভাইরাসের কোনো লক্ষণই ছিলো না।

তারা আরো বলেন, যারা এসেছে তাদের বেশিরভাগই বড় বড় শহরে এসেছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গিয়েছে নিউইয়র্কে। ধারণা করা হচ্ছে তারা যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য স্থানেও গিয়েছেন।

ট্রাভেল ডেটাতে আরো বলা হয়, জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত চীন থেকে ফিরে এসেছে ১৮ হাজার মার্কিনি। তাদের মধ্যমেও ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়তে পারে।

করোনা: বিশ্বব্যাংক থেকে ১০ কোটি ডলার পাচ্ছে বাংলাদেশ


করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিশ্বব্যাংক যে জরুরি তহবিল ঘোষণা করেছে সেখান থেকে ১০ কোটি ডলার ( সাড়ে ৮ শ কোটি টাকা প্রায়) পাচ্ছে বাংলাদেশ। গতকাল শুক্রবার বিশ্বব্যাংকের বোর্ড সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়।

সংস্থাটির এক বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ, সংক্রমণ প্রতিরোধ, স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ তথা স্বাস্থ্যসেবা শক্তিশালী করার কাজে এই অর্থ ব্যয় করা যাবে। কোভিড–১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডেমিক প্রিপার্ডনেস প্রকল্পের আওতায় এই অর্থ বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে দিচ্ছে সংস্থাটি। ভারত ও পাকিস্তান ইতোমধ্যে এই জরুরি তহবিল থেকে অর্থ নিয়েছে।

বাংলাদেশকে দেওয়া অর্থের ব্যাপারে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেন, নতুন এই ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে বিশ্বব্যাংক। এই অর্থ সংক্রমণ প্রতিরোধে বাংলাদেশের জাতীয় পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহায়তা করবে।

করোনাভাইরাস বিশ্বব্যাপী মহামারি আকার ধারণ করলে এর সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রায় ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের বিশেষ তহবিল গঠন করে বিশ্বব্যাংক।

ভারত থেকে ফিরলেন ১১৬ জন


নোভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ভারতের কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় আটকে পড়া বাংলাদেশি নাগরিকদের মধ্যে আরো ৩৫ জন দেশে ফিরেছেন। শনিবার সকালে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় যশোরের বেনাপোল ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে তারা দেশে ফেরেন। এ নিয়ে গত দুদিনে ফিরলো ১১৬ জন।

ফেরত আসা নাগরিকদের চেকপোস্টে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। এ সময় পাঁচজনের শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকায় তাদের যশোর জেনারেল হাসপাতালে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে নেওয়া হয়। বাকি ৩০ জনের শরীরে কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্তের কোন উপসর্গ না থাকায় তাদের হাতে ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার সিল দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে নেওয়াদের মধ্যে একজন যশোরের, একজন মাগুরার, একজন খুলনার এবং দুইজন গোপালগঞ্জের।

এর আগে গতকাল শুক্রবার একই চেকপোস্ট দিয়ে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় দেশে ফেরেন ৮১ জন বাংলাদেশি। 

জানা যায়, ভারতে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের দেশে ফিরেয়ে আনার ব্যাপারে দুই দেশের দূতাবাস ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মধ্যে আলাপ-আলোচনা হয়। পরে ভারত সরকার বিশেষ ব্যবস্থাপনা তাদের ফেরার অনুমতি দেয়।

এ বিষয়ে বেনাপোলে দায়িত্বরত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ভারত থেকে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় ফিরে আসা যাত্রীদের সতর্কতার সঙ্গে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। যাদের শরীরের তাপমাত্রা বেশি বা করোনাভাইরাসের লক্ষণ পাওয়া যাচ্ছে তাদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হচ্ছে।

বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবীব জানান, ভারত থেকে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় দেশে ফেরা বাংলাদেশিদের বেশিরভাগের বাড়ি যশোর, খুলনা, নড়াইল, মাগুরা, গোপালগঞ্জ, কুষ্টিয়া ও পিরোজপুর জেলায়। দেশে ফেরার পর তাদের প্রত্যেকের পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা ও মোবাইল ফোন নম্বর রাখা হচ্ছে এবং হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে স্ব-স্ব জেলায় সে তথ্য পাঠানো হচ্ছে।

একদিকে করোনা অন্যদিকে চাকরির ভয়, কী-ই বা করা তাদের!


করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার গত ২৪ মার্চ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। যে ছুটি আজ ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছিল। কিন্তু তার আগেই আবারো সরকারি ছুটি বাড়ানো হয়েছে। ওই ছুটির সঙ্গে তাল মিলিয়ে আজ শনিবার পর্যন্ত গার্মেন্টস সেক্টরে ছুটি ঘোষণা করে বিকেএমইএ। সেই হিসাবে আজ কারখানায় উপস্থিত থাকার কথা শ্রমিকদের।

কিন্তু একই কারণে দেশে বন্ধ রয়েছে সব ধরনের গণপরিবহন। ফলে ঢাকায় আসার কোনো যানবাহন পাননি শ্রমিকরা। কিন্তু তাতে কী, কারখানায় তো হাজিরা দিতে হবে। তা না হলে যে চাকরি থাকবে না। আর চাকরি না থাকলে জীবন চলবে কীভাবে? তাই কোনো উপায় না পেয়ে পায়ে হেঁটেই ঢাকার পথে রওনা দেন শ্রমিকরা।

তারা বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হয়তো কেটে যাবে অল্পদিন পর। কিন্তু চাকরি হারালে তো আর পাওয়া যাবে না। চাকরি গেলে পরিবার নিয়ে পথে বসতে হবে। তাই যেভাবেই হোক ঢাকায় পৌঁছতে হবে।

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা এবং আজ শনিবার সকালে ময়মনসিংহ ব্রিজের বাসস্ট্যান্ড এবং গাজীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ও আশপাশের এলাকায় এমনই শত শত শ্রমিককে পায়ে হেঁটে ঢাকায় আসতে দেখা যায়। প্রথমে বাড়ি থেকে বের হয়ে মফস্বল এলাকায় রিকশা-ভ্যান, সিএনজি বা অটোরিকশায় তারা মহাসড়কে চলে আসেন। এর পর মহাসড়কের বিস্তৃত পথ ধরে হাঁটতে থাকেন ঢাকার দিকে। কেউ কেউ ভাগ্যক্রমে দুই একটা পেয়ে তাতে উঠে যান।

কথা হয় গার্মেন্টস কর্মী রাকিব হাসানের সঙ্গে। ২৮ বছরের এই যুবক বলেন, গার্মেন্টসে কাজ করেই তাদের পরিবারের খাবার জোটে। তাই কারখানায় হাজিরা না দিতে পারলে তার চাকরি থাকবে না। সুতরাং পায়ে হেঁটেই বলেন আর রিকশায় চড়ে, যেভাবেই হোক ঢাকায় যেতেই হবে।

ময়মনসিংহের তারাকান্দা থেকে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে শনিবার ভোর ৬টায় গাজীপুরের উদ্দেশে রওনা দেন আফজাল হোসেন। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, সবকিছু বন্ধ। অথচ কারখানা খোলা। একদিকে করোনার ভয়, অন্যদিকে চাকরি হারানোর ভয়। আসলে আমরা কী করব, কোথায় যাব?

এ ব্যাপারে ময়মনসিংহ জেলা মোটর মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, যানবাহন বন্ধ থাকায় তাদেরই ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু সরকারের নির্দেশনা থাকায় কিছুই করার নেই। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত যানবাহন বন্ধ থাকবে বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামান বলেন, কিছু গার্মেন্টস আজ থেকেই খোলা। তাই গার্মেন্টস শ্রমিকদের ঢাকায় যেতে হচ্ছে। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় তাদের ভোগান্তি হচ্ছে। তবে আমরা যতটুকু পারছি তাদের সহযোগিতা করছি বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। আজ শনিবারের তথ্য অনুযায়ী এ পর্যন্ত দেশে মোট ৭০ জনকে করোনা রোগী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩০ জন সুস্থ হয়েছেন। মারা গেছে ৮ জন।

এমনই পরিস্থিতিতে আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত গণপরিবন চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। আজ সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।

Friday, April 3, 2020

করোনা থেকে সুস্থ হয়েই বিশাল হাসপাতাল খুললেন প্রিন্স চার্লস


প্রাণঘাতী করোনাভাইসের সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়েছেন ব্রিটিশ সিংহাসনের উত্তরাধিকারী যুবরাজ প্রিন্স চার্লস। সুস্থ হওয়ার পর আজ শুক্রবার পূর্ব লন্ডনে বড় একটি হাসপাতালের উদ্ভোধন করেছেন তিনি। শুধুমাত্র করোনাভা্ইরাসে আক্রান্তদের এই হাসপাতালটিতে চিকিৎসা দেয়া হবে।

সিএনএনের বরাতে জানা যায়, পূর্ব লন্ডনে অবস্থিত এক্সেল কনফারেন্স সেন্টারকে হাসপাতালে পরিণত করা হয়েছে। এর নাম দেয়া হয়েছে এনএইচএস নাইটিঙ্গেল হাসপাতাল। ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্য সেবার (এনএইচএস) তত্তাবধানে এটি পরিচালিত হবে। আজ শুক্রবার এক ভিডিও কনফারেন্সে এর উদ্ভোধন করেন চার্লস।

চার্লস বলেন, আমার ভাগ্য ভালো আমি মৃদু করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলাম। আইসোলেশনে থেকে সুস্থ হয়েছি। এরকম ভাগ্য অনেকেরই হয় না। করোনার সংক্রমণে তীব্র যন্ত্রণা অনুভব করতে হয় অনেককেই। তাদের সহযোগিতার জন্যই নাইটিঙ্গেল হাসপাতাল। এই হাসপাতাল আক্রান্তদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে নিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাবে।

তিনি আরো বলেন, ভেন্টিলেটর সুবিধাসহ ৫০০ বেড থাকছে এই হাসপাতালে। যখন চালু হয়ে যাবে তখন একসঙ্গে চার থেকে পাঁচ হাজার মানুষকে চিকিৎসা সুবিধা দেয়া যাবে।


গত সপ্তাহ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন চার্লস। এরপর তিনি স্কটল্যান্ডের বিরখাইলে তার আবাস্থলে আইসোলেশনে চলে যান। সুস্থ হয়ে সেখান থেকেই কাজ করে যাচ্ছেন। আজ শুক্রবার ব্রিটিশ রাজ পরিবারের ইতিহাসে এই প্রথম কেউ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কোনো কিছু উদ্ভোধন করা হলো।

যুক্তরাজ্যে এখন পর্যন্ত ৩৮ হাজার ১৬৮ জনের দেহে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। মৃত্যু হয়েছে তিন হাজার ৬০৫ জনের।

ভারতে আটকে আছেন আড়াই হাজার বাংলাদেশি


প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) বিস্তার রোধে ভারতে চলছে ২১ দিনের লকডাউন। যা আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত জারি থাকবে। দেশটিতে সব ধরনের বাস, রেল ও বিমান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সেখানে আটকে পড়েছেন প্রায় আড়াই হাজার বাংলাদেশি।

শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনের দেয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশটিতে প্রায় ২ হাজার ৫০০ জন বাংলাদেশি আটকে আছেন। যারা লকডাউন শুরু হওয়ার আগে বিভিন্ন কারণে সেখানে গিয়েছিলেন। এর মধ্যে এক হাজারের বেশি শিক্ষার্থী।

এতে আরো বলা হয়, ভারতে আটকে পড়া এসব প্রবাসীর আর্থিক বা অন্য কোনো সমস্যার সমাধানে হাইকমিশনসহ অন্যান্য বাংলাদেশি মিশনগুলো সর্বদা সচেষ্ট আছে এবং সজাগ দৃষ্টি রাখছে। পাশাপাশি এসব বাংলাদেশি প্রবাসীর সঙ্গে সার্বক্ষণিক টেলিফোন, হটলাইনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ রাখছে।

করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট এ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ভারতসহ বিশ্বের অন্য যেসব দেশে বাংলাদেশি প্রবাসীরা আটকে আছেন তাদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

লকডাউন জারি থাকা সময়ের মধ্যে প্রবাসী ভারতীয়সহ কোনো বিদেশি নাগরিক দেশটিতে প্রবেশ করতে পারবে না। পাশাপাশি সেখানে অবস্থান করা বিদেশি নাগরিকদেরও দেশত্যাগে নিরুৎসাহিত করছে ভারত সরকার। দেশটিতে বর্তমানে আন্তঃরাষ্ট্রীয় যোগাযোগ ব্যবস্থাও বন্ধ রয়েছে।

ভারতে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ২ হাজার ৫৬৭ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৭২ জন। চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৯২ জন।

করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ২০ হাজার কোটি রুপি দেবে পাকিস্তান


করোনাভাইরাসের কারণে অন্যান্য দেশের মতো পাকিস্তানেও চলছে লকডাউন। এ কারণে যারা চাকরি হারিয়েছেন বা সংকটে পড়েছেন তাদের জন্য ২০ হাজার কোটি রুপি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। আজ শুক্রবার এ তথ্য জানান তার অর্থ উপদেষ্টা হাফিয শেখ। খবর দ্য ডন।

এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, লকডাউন চলার কারণে অনেকেই চাকরি হারিয়েছেন, অনেকের ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে। দিনমজুররা চরম অভাবে দিন কাটাচ্ছেন। তাদের সহযোগিতা করতে প্রধানমন্ত্রী ২০ হাজার কোটি রুপির (পাকিস্তানি ১ রুপি সমান বাংলাদেশি ৫১ পয়সা) একটি ফান্ড তৈরি করার নির্দেশনা দিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, প্রাদেশিক সরকার, দেশের বড় ব্যবসায়ীদের সাহায্যে এ ফান্ড গড়ে তোলা হয়েছে। এ অর্থ তাদেরই দেয়া হবে যারা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।

পাকিস্তানে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৭ জনের দেহে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। এ সময় মারা গেছে এক জন। দেশটিতে সর্বমোট আক্রান্তের সংখ্যা দুই হাজার ৪৫৮ জন। এখন পর্যন্ত প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটি কেড়ে নিয়েছে ৩৫ জনের প্রাণ।

Thursday, April 2, 2020

বাড়ি গিয়ে খাদ্য পৌঁছে দিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ


করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে দেশব্যাপী সাধারণ ছুটি চলছে। আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত তা বলবৎ থাকবে। এ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন দরিদ্র, অসহায় ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা। ইতোমধ্যে তাদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন সমাজের সর্বস্তরের জনগণ।

দরিদ্র ও অসহায় পরিবারগুলোর কাছে এরইমধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন এগিয়ে এসেছে। অনেকে ব্যক্তি উদ্যোগেও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করছেন।

কিন্তু এতকিছুর পরও নিম্ন আয়ের পরিবারগুলো ঠিকভাবে খাদ্যসামগ্রী পাচ্ছে না। আত্মসম্মানের ভয়ে অধিকাংশই ত্রাণ নিতে বাড়ির বাইরে আসছেন না। ফলে নিদারুণ কষ্টে তাদের দিন অতিবাহিত করতে হচ্ছে।

তাই গৃহবন্দি হয়ে পড়া সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষেরা যেন ত্রাণ সহায়তা পান সেজন্য তাদের বাড়িতে গিয়ে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শাহ কামাল গণমাধ্যমকে বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাব কমাতে সরকার ঘোষিত দেশব্যাপী চলমান ছুটির মধ্যে নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের অনেকে আর্থিক সংকটে পড়তে পারেন। কিন্তু আত্মসম্মানের ভয়ে হাত পাতা কিংবা লাইনে দাঁড়িয়ে ত্রাণ নেয়া তাদের পক্ষে সম্ভব না।

এজন্য তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ইতোমধ্যে ডিসিদের কাছে চার দফায় মোট ৪৮ হাজার ৫০০ মেট্রিকটন চাল এবং নগদ প্রায় ১৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সামনে আরো দেয়া হবে। ইনশাআল্লাহ দেশে ত্রাণের কোনো সংকট দেখা দেবে না, যোগ করেন সিনিয়র সচিব।

চীনে নিষিদ্ধ হচ্ছে কুকুর-বিড়ালের মাংস


বন্যপ্রাণীর মাংস বেচা-কেনা এবং খাওয়ার জন্য চীন পুরো বিশ্বের কাছে বিতর্কিত। এমনকি দেশটিতে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর অনেকেই তাদের এ বদঅভ্যাসকেই দায়ী করেন। এমতাবস্থায় দেশটিতে প্রথম শহর হিসেবে কুকুর-বিড়াল শিকার, মাংস বেচা-কেনা এবং খাওয়া নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে শেনঝেন। খবর বিবিসি।

এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে দেশটির সরকার বন্যপ্রাণী শিকার, মাংস বেচা-কেনা এবং খাওয়া বন্ধ করতে আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেয়। যার প্রেক্ষিতে শেনঝেনের সরকার এমন সিদ্ধান্ত নেয়। আগামী ১ মে থেকে দক্ষিণাঞ্চলীয় এ শহরটিতে নতুন এ আইন কার্যকর হবে।

শেনঝেন সরকারের একেজন মুখপাত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশেই কুকুর-বিড়ালের মাংস খাওয়া অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়। কারণ মানুষের পোষা প্রাণীদের মধ্যে এরা অন্যতম। তাই মানবিকতার দিক বিবেচনা করেই তারা নতুন এই আইন কার্যকর করছেন।

এ বিষয়ে দেশটির অর্থনৈতিক আইন বিভাগের পরিচালক ওয়াং রুইহে বলেন, চীনের সাধারণ মানুষের বিভিন্ন বন্যপ্রাণী খাওয়ার প্রবণতার করণেই তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়েছে। এমনকি বিশ্বজুড়ে এর সমালোচনাও হয়েছে। ধারণা করা হয়, বন্যপ্রাণী থেকেই দেশটির প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মানুষের শরীরে ছড়িয়েছে।

হিউম্যান সোসাইটি ইন্টারন্যাশনালের (এইচএসআই) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এশিয়ায় প্রতি বছর মাংসের জন্য ৩০ মিলিয়ন কুকুর হত্যা করা হয়। চীনে এই প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। তবে সম্প্রতি কয়েক বছরে তা কমে এসেছে। এখন দেশটির অধিকাংশ মানুষই কুকুর-বিড়ালের মাংস খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।

নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ইরানকে ব্রিটেন-জার্মানির সহায়তা


করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো নাজুক অবস্থায় রয়েছে ইরান। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের উপেক্ষা করে দেশটির পাশে দাঁড়ালো ইউরোপের তিন প্রভাবশালী দেশ ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি।

তিন দেশ করোনাভাইরাস মোকাবেলায় যৌথ আর্থিক সহযোগিতার মাধ্যমে ইরানে চিকিৎসা সামগ্রী পাঠিয়েছে।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম টেলিগ্রাফ জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ইনটেক্স সিস্টেম ট্রানজেকশনের মাধ্যমে (ইউরোপীয় দেশগুলোর ইরানের লেনদেনের বিকল্প পদ্ধতি) তেহরানে নিরাপদে তাদের সাহায্য পৌঁছে গেছে।

চলতি মাসের শুরুতেই উল্লিখিত তিন দেশ ইরানকে ৪০ লাখ পাউন্ডের একটি প্যাকেজ দেওয়ার ঘোষণা দেয়। এর মধ্যে রয়েছে করোনাভাইরাস শনাক্তের কিট এবং চিকিৎসকদের পোশাক ও অন্যান্য চিকিৎসা সরঞ্জাম।

ইরানের সঙ্গে করা বিশ্বের পাঁচটি দেশের ও একটি সংস্থার পারমাণবিক চুক্তি থেকে একতরফাভাবে বেরিয়ে গিয়ে ২০১৮ সালে তেহনের ওপর নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ট্রাম্প প্রশাসন। তার পর থেকেই তেহরান বহির্বিশ্বের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ অন্যান্য কর্মকাণ্ড চালাতে পারছে না।

বিপর্যস্ত স্পেন, মৃতের সংখ্যা ছাড়ালো ১০ হাজার


করোনাভাইরাসের সংক্রমণের প্রভাবে নতুন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে স্পেন। প্রতিদিনই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে ৯৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১০ হাজার ৩ জনে।

বেড়েছে নতুন সংক্রমণের সংখ্যাও। যার ফলে হাসপাতালগুলোতে এখন রোগীদের আর জায়গা মিলছে না। নতুন যারা আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের অধিকাংশকেই নিজ বাড়িতে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

স্পেনে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ১০২ জন। এ নিয়ে সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ১০ হাজার ২৩৮ জনে দাঁড়ালো।

আক্রান্তদের মধ্যে বিভিন্ন হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন ৬ হাজার ৯২ জন।

ইতোমধ্যে চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৬ হাজার ৭৪৩ জন।

সম্প্রতি দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে বলা হয়, খুব শিগগিরই স্পেনে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে। কিন্তু গত ২৪ ঘণ্টায় যেভাবে মৃতের সংখ্যা ও নতুন সংক্রমণ বেড়েছে তাতে শিগগিরই অবস্থার পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা খুব একটা নেই।

ছেলের নাম ভাইরাস, মেয়ের নাম করোনা!


করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরও কোনো সমস্যা ছাড়াই যমজ সন্তানের জন্ম দিলেন আন্নামারিয়া জোসে রাফেল গোঞ্জালেস। ৩৪ বছর বয়সী এই নারী মেক্সিকোর নাগরিক। কোভিড-১৯ পজিটিভ হওয়ার পরও দুই সন্তানকে জগতের আলো দেখাতে পেরেছেন, সেই খুশিতেই হয়তো ছেলের নাম রাখলেন ভাইরাস এবং মেয়ের নাম করোনা!

মেক্সিকোর জেনারেল লা ভিলার সিটি হাসপাতালে ২৭ মার্চ রাত ২টায় যমজ সন্তানের জন্ম দেন আন্নামারিয়া। গর্ভবতী থাকাকালীন তার করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। যতটুকু না নিজের জন্য তারচেয়ে বেশি অনাগত সন্তানের জন্য চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন আন্নামারিয়া। শেষ পর্যন্ত সব ঠিকঠাক থাকায় আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে গোটা হাসপাতালজুড়ে।

হাসপাতালের চিকিৎসক এদুয়ার্দো ক্যাস্তিলাস স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, নিজে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরও এমন একটি আতঙ্কজনক পরিস্থিতিতে মনের জোর ধরে রাখা খুব কঠিন। আন্নামারিয়া সেটা পেরেছেন। চিকিৎসক হিসেবে আমরাও খুব খুশি হয়েছি। জন্মের পরপর অনেকটা মজার ছলেই আমি যমজ দুই সন্তানকে ডাকলাম ভাইরাস ও করোনা নামে। সেটা যে মায়ের পছন্দ হয়ে যাবে, তা ভাবিনি।

মা এবং দুই সন্তান-তিনজনই ভালো আছেন। চিকিৎসকরা আশা করছেন, আন্নামারিয়া দ্রুতই করোনাভাইরাস মুক্ত হয়ে উঠবেন।

একদিনেই আক্রান্ত এক লাখ, মৃত্যু ৬ হাজারের বেশি


বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) গত ২৪ ঘণ্টায় এক লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৬ হাজারের বেশি। আক্রান্ত এবং মৃতের দিক দিয়ে একদিনে এটিই সর্বোচ্চ।

বৃহস্পতিবার বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ২৫ হাজার মানুষ। গোটা বিশ্বে তা এক লাখের বেশি। গোটা বিশ্বে মারা গেছেন ৬ হাজাররের বেশি মানুষ। যার অর্ধেকের বেশি মারা গেছে ইতালি, স্পেন এবং যুক্তরাষ্ট্রে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহে বিশ্বজুড়ে গড়ে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৫৫ হাজার মানুষ করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছে। প্রতিদিন মারা গেছে গড়ে ৩ হাজার করে।

গতকাল বুধবার প্রকাশিত হওয়া তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার একদিনে বিশ্বজুড়ে ৭৫ হাজার মানুষ কোভিড-১৯ ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন এবং মারা গেছেন ৪ হাজারের বেশি।

এ ধারা অব্যাহত থাকলে কয়েকদিনের মধ্যে সংক্রমণের সংখ্যা ১০ লাখ এবং মৃতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছে যুক্তরাষ্ট্রের জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়।

বিশ্বের ২০৩টি দেশে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত মোট সংক্রমিত হয়েছেন ৯ লাখ ৪০ হাজার ৭৩৩ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৪৭ হাজার ৫১৮ জন। চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ১ লাখ ৯৬ হাজার ২১৭ জন।

Tuesday, March 31, 2020

ইরানে ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৩১০০, মৃত ১৪১


ইরানে গত ২৪ ঘণ্টায় মরণঘাতী করোনাভাইরাসে আরো ৩ হাজার ১১১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। সেইসঙ্গে মারা গেছে ১৪১ জন। মঙ্গলবার দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।

মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন বলছে, দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কিয়ানুশ জাহানপুর রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে মঙ্গলবার বলেন, এ নিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪৪ হাজার ৬০৬ জন। এ ছাড়া এ পর্যন্ত ২ হাজার ৮৯৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।

জাহানপুর আরো জানান, এ পর্যন্ত ১৪ হাজার ৬৫৬ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছে। এ ছাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীনদের মধ্যে ৩ হাজার ৭০৩ জনের অবস্থা গুরুতর।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গণনাকারী সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য মতে, এ পর্যন্ত বিশ্বের দুই শতাধিক দেশে ছড়িয়ে পড়েছে মরণাঘাতী এ ভাইরাসটি। এতে এখন পর্যন্ত ৮ লাখ ২ হাজার ৭৪৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৩৯ হাজার ১৬ জন। এ ছাড়া চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ৭২ হাজার ৩১৯ জন।