Thursday, March 26, 2020

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সেই বিজ্ঞপ্তি বাতিল


বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও শনাক্ত হয়েছে করোনাভাইরাস। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটির বিস্তার রোধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও গণপরিবহন, অভ্যন্তরীণ ও দুটি ছাড়া সব আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধসহ নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভাইরাসটি নিয়ে দেশের মানুষ, এমনকি চিকিৎসা সেবায় জড়িতদের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে সাধারণ সর্দি-জ্বর নিয়েও হাসপাতালে গেলে চিকিৎসা না দেওয়া বা অবহেলা এমনকি করোনা আক্রান্ত বলে গুজব ছড়ানোর অভিযোগ উঠে। শুধু তাই নয়, চিকিৎসা না দেওয়ায় দেশে একধিক ব্যক্তির মৃত্যুর অভিযোগও উঠে।

এমনই প্রেক্ষাপটে গতকাল বুধবার একটি আদেশ জারি করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এতে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে সাধারণ রোগীর চিকিৎসা না দিলে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল বা চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়।

মন্ত্রণালয়ের এই নির্দেশনাটি বিজ্ঞপ্তি আকারে চারটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশ করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। একই সঙ্গে বিজ্ঞপ্তিটি ব্যাপকভাবে প্রচারের ব্যবস্থা করতেও নির্দেশনা দিয়েছিল মন্ত্রণালয়।

এতে বলা হয়, ‘কোনো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ নির্দেশনা অমান্য করলে ভুক্তভোগীকে তাৎক্ষণিক সেনাবাহিনীর টহলপোস্টে দায়িত্বরত কর্মকতা/নিকটবর্তী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অবহিত করার অনুরোধ করা হয়েছে। এ আদেশ অমান্য করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের রেজিস্ট্রেশন বাতিল, লাইসেন্স বালতিলসহ অন্যান্য আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

তবে ওই বিজ্ঞপ্তির কপি ফেসবুকে তুলে ধরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন চিকিৎসকরা। বিভিন্ন মহল থেকেও সরকারের আমালাদের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করা হয়। 

বিজ্ঞপ্তিটি জারির পর পরই বুধবার বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন ‘প্রতিবাদলিপি ও গণপদত্যাগ’ শিরোনামে এক বিবৃতি দেয়। এতে উক্ত পত্রটি দুঃখপ্রকাশসহ প্রত্যাহার এবং সংশ্লিষ্ট উপসচিবের প্রত্যাহারপূর্বক বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ সংক্রান্ত ঘোষণা ২৬ মার্চ বিকাল ৫টার মধ্যে না দিলে গণপদত্যাগের হুমকি দেওয়া হয়।

তবে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশেন বেঁধে দেওয়ার সময়ের আগেই বুধবার বিজ্ঞপ্তিটি বাতিল দেখিয়ে তা স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তি জারি এবং তা বাতিল উভয়ক্ষেত্রে স্বাক্ষর করেছেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের উপসচিব (সরকারী স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা-২) রোকেয়া খাতুন।

বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশে ৫ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৪ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১১ জন।

No comments:

Post a Comment