পশ্চিমা বিশ্বের শক্তিশালী দেশগুলোও খাবি খাচ্ছে করোনাভাইরাসের আক্রমণে। নানা রকম কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার পরও তারা এই প্রাণঘাতী ভাইরাসের সঙ্গে পেরে ওঠেনি। লাশের স্তূপ জমা হচ্ছে প্রত্যেক দিন। সেই তুলনায় অনেক কম বিপর্যয় হয়েছে এশিয়ার চারটি দেশে।
করোনাভাইরাসের আঁতুড় ঘর চীনের পার্শ্ববর্তী দেশ হয়েও কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে সফল যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে তারা। দেশগুলো হলো সিঙ্গাপুর, হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান। কী পদক্ষেপ নিয়েছিল তারা, কীভাবে মোকাবেলা করেছে এই ভাইরাসকে-বিবিসির এক প্রতিবেদনে তা উঠে এসেছে।
দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া
প্রথমত বিষয়টাকে গুরুত্ব সহকারে নিয়েছিল এই চার দেশ। পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলোও গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে, কিন্তু সময় চলে যাওয়ার পর। পুরোপুরি সংক্রমিত হওয়ার আগেই যদি করোনা পরীক্ষার ব্যাপক প্রস্তুতি রাখা যায় এবং আক্রান্তদের দ্রুত আলাদা করে ফেলা যায় তাহলে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে জয়ী হওয়া সম্ভব।
পরীক্ষাগুলো সাশ্রয়ী করা
মাত্র কয়েকটি সংক্রমণের ঘটনা ঘটার পরই দক্ষিণ কোরিয়া কোভিড-১৯ পরীক্ষার ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল। এখন পর্যন্ত তারা ২ লাখ ৯০ হাজার মানুষের নমুনা পরীক্ষা করেছে। শুধু তাই নয়, প্রতিদিন দেশটি বিনামূল্যে ১০ হাজার মানুষের করোনা পরীক্ষা করছে। এই উদ্যোগের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও দেশটির প্রশংসা করেছে।
শনাক্তের সঙ্গে সঙ্গে পৃথক করা
শুধু পরীক্ষা করাই যথেষ্ট নয়, শনাক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পৃথক করা এবং আক্রান্ত ব্যক্তি এতদিন কার সঙ্গে মিশেছে তাদেরকে খুঁজে বের করে পরীক্ষার আওতায় আনা। শুরুর দিকে অনেক দেশই এই কাজটি ঠিকভাবে করতে পারেনি। এশিয়ার এই চারটি দেশ তা ভালোভাবে করতে পেরেছে। সিঙ্গাপুরে যদি কাউকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয় তাহলে তার হাতে ইলেক্ট্রনিক ব্রেসলেট পরিয়ে দেওয়া হয় তার গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করার জন্য।
জনগনের পাশে থাকা
কর্মকৌশল বাস্তবায়নে সরকারের সঙ্গে জনগনের নিবিড় সম্পর্ক থাকতে হয়। করোনা মোকাবেলার ক্ষেত্রেও একথা সত্য। সিঙ্গাপুর, হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান এই কাজটি দক্ষতার সঙ্গে করেছে। আতঙ্কিত করার বদলে প্রতিনিয়ত মানুষকে আশ্বস্ত করেছে। নাগরিকরাও সর্বোচ্চ সচেতনতা অবলম্বন করার মাধ্যমে সরকারকে সহযোগিতা করেছে। পারস্পরিক এই বোঝাপড়ার কারণেই করোনা ওই দেশগুলোতে ঝেঁকে বসতে পারেনি।
No comments:
Post a Comment