করোনার সংক্রমণের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে চলতি বছরের প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা কেন্দ্রীয়ভাবে হবে না। এই পরীক্ষা না নেওয়ার বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তবে বিদ্যালয় খোলা সম্ভব হলে নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বার্ষিক পরীক্ষা হবে। আজ মঙ্গলবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন এবং জ্যেষ্ঠ সচিব আকরাম-আল হোসেন সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়েছেন।
এই পরীক্ষা না নেওয়ার জন্য কয়েক দিন আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সারসংক্ষেপ আকারে প্রস্তাব পাঠিয়েছিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
তারও আগে ৬ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা না নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করার কথা বলা হয়।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, করোনার কারণে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে স্বাভাবিক পাঠদান কার্যক্রম ১৮ মার্চ থেকে বন্ধ। ছুটির মেয়াদ ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। সেপ্টেম্বরে বিদ্যালয়গুলো খুলে দেওয়া হলেও করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে অভিভাবকেরা তাঁদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে না-ও পাঠাতে পারেন। তখন যারা বিদ্যালয়ে যাবে এবং যারা যাবে না, তাদের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি হবে।
জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমির করা পাঠ পরিকল্পনা অনুযায়ী পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা নিতে হলে আরও প্রায় ৫০ কার্যদিবস পাঠদান প্রয়োজন। কিন্তু সেপ্টেম্বরে বিদ্যালয় না খোলা গেলে যে কার্যদিবস থাকবে, এতে পঞ্চম শ্রেণির বাকি পাঠদান শেষ করা সম্ভব নয়।
প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা না নেওয়ার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী। কয়েক দিন আগে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, শুধু এ বছর নয়, সমাপনী পরীক্ষা একেবারেই বাতিল করা উচিত। কারণ, তাঁরা গবেষণা করে দেখেছেন, এই পরীক্ষাটি কোনো কাজে আসছে না। বরং কোচিং-প্রাইভেটের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে উপবৃত্তির পরিমাণ ও পরিসর আরও বাড়ানো উচিত। আর কীভাবে মেধাবৃত্তি দেওয়া যায়, সে বিষয়েও বিকল্প চিন্তাভাবনা করতে হবে।
No comments:
Post a Comment