Monday, November 19, 2018

অবিভক্ত বাংলার নির্বাচন ও মন্ত্রিসভা

অবিভক্ত বাংলার মন্ত্রিসভা

প্রশ্ন: ১৯৩৭ সালের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় কোন্ আইনের আওতায়?
উত্তর: ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইন।

প্রশ্ন: ১৯৩৭ সালের নির্বাচনে ফজলুল হকের নির্বাচনী প্রতীক কি ছিল?
উত্তর: হুক্কা।

প্রশ্ন: ১৯৩৭ সালের নির্বাচনে ফজলুল হক কোথা থেকে নির্বাচিত হন?
উত্তর: পটুয়াখালী (তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল খাজা নাজিদ উদ্দিন)।


বাংলার প্রথম বা হক মন্ত্রিসভা

প্রশ্ন: এ কে ফজলুল হকের প্রথম মন্ত্রিসভা গঠিত হয় কবে?
উত্তর: ১৯৩৭ সালে।

প্রশ্ন: এ কে ফজলুল হক কোন্ দলের নেতা ছিলেন?
উত্তর: কৃষক প্রজা পার্টি (KKP)

প্রশ্ন: শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের নেতৃত্বে কতজন সদস্য নিয়ে কোয়ালিশন মন্ত্রিসভা গঠিত হয়?
উত্তর: ১১ জন (৬ জুন মুসলিম ও ৫ জন হিন্দু)।

প্রশ্ন: এ কে ফজলুল হকের প্রথম মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম কি?
উত্তর: এ কে ফজলুল হক (মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী), নলিনীরঞ্জন সরকার (অর্থমন্ত্রী), কিজয়প্রসাদ সিংহ রায় (রাজস্ব), মহারাজা শিরিষচন্দ্র নন্দী (যোগাযোগ ও পূর্ত), প্রসন্নদেব রাইকুত (বন ও অন্তঃশুল্ক), মুকুন্দবিহারী মলিক (সমবায় ঋণদান ও গ্রামীণ ঋণবদ্ধতা), স্যার খাজা নাজিমউদ্দিন (স্বরাষ্ট্র), নওয়াব খাজা হাবিবুল্লাহ বাহাদুর (কৃষি ও শিল্প), হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী (বাণিজ্য ও শ্রম), নওয়াব মুশাররফ হোসেন (বিচার ও আইন) এবং সৈয়দ নওশের আলী (জনস্বাস্থ্য ও স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন)।

প্রশ্ন: বাংলায় প্রথম কে প্রাদেশিক মন্ত্রিসভা গঠন করেন?
উত্তর: মুসলিম লীগ ও কৃষক প্রজা পার্টির কোয়ালিশনে এ কে ফজলুল হক।

প্রশ্ন: বাংলার প্রথম মুখ্যমন্ত্রী কে?
উত্তর: এ কে ফজলুল হক।

প্রশ্ন: বাংলার প্রথম মন্ত্রিসভা কবে ভেঙে যায়?
উত্তর: ১ ডিসেম্বর ১৯৪১।


হকের দ্বিতীয় মন্ত্রিসভা

প্রশ্ন: এ কে ফজলুল হকের দ্বিতীয় মন্ত্রিসভা গঠিত হয় কবে?
উত্তর: ১৩ ডিসেম্বর ১৯৪১।

প্রশ্ন: শ্যামা-হক মন্ত্রিসভা কি?
উত্তর: ১৯৪১ সালে হকের প্রথম মন্ত্রিসভা ভেঙে গেলে এ কে ফজলুল হক হিন্দু মহাসভার সাথে কোয়ালিশনে মন্ত্রিসভা গঠন করেন। হিন্দু মহাসভার নেতা শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির নামে সহযোগে এ মন্ত্রিসভাকে ‘শ্যামা-হক’ মন্ত্রিসভা বলা হতো।

প্রশ্ন: হকের দ্বিতীয় মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম কি?
উত্তর: এ কে ফজলুল হক [প্রধানমন্ত্রী (স্বরাষ্ট্র ও প্রচার)], ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি (অর্থ), নওয়াব খাজা হাবিবুল্লাহ (কৃষি ও শিল্প), সন্তোষ কুমার বসু (স্বাস্থ্য ও স্থানীয় সরকার), খান বাহাদুর আবদুল করিম (শিক্ষা, শ্রম ও বাণিজ্য), প্রমথনাথ ব্যানার্জী (বিচার ও সংসদীয় বিষয়ক), খান বাহাদুর মৌলভী হাশেম আলী (সমবায়, ঋণ ও পল্লী উন্নয়ন), শামসুদ্দীন আহমদ (যোগাযোগ ও পূর্ত), উপেন্দ্রনাথ বর্মন (বন ও আবগারি)।

প্রশ্ন: হকের দ্বিতীয় মন্ত্রিসভা কবে ভেঙে যায়?
উত্তর: ২৮ মার্চ ১৯৪৩।


লাহোর প্রস্তাব

প্রশ্ন: লাহোর প্রস্তাবের অন্য নাম কি?
উত্তর: পাকিস্তান গঠনের প্রস্তাব।

প্রশ্ন: কে, কবে লাহোর প্রস্তাব উত্থাপন করেন?
উত্তর: এ কে ফজলুল হক; ২৩ মার্চ ১৯৪০।

প্রশ্ন: লাহোর প্রস্তাব গৃহীত হয় কবে?
উত্তর: ২৪ মার্চ ১৯৪০।

প্রশ্ন: লাহোর প্রস্তাব কোথায় উত্থাপন করা হয়?
উত্তর: লাহোরে অনুষ্ঠিত নিখিল ভারত মুসলিম লীগের সাধারণ অধিবেশনে।

প্রশ্ন: লাহোর প্রস্তাব অধিবেশনের সভাপতি কে ছিলেন?
উত্তর: মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ।

প্রশ্ন: কংগ্রেসের কোন্ নেতা লাহোর প্রস্তাবের তীব্র নিন্দা করেন?
উত্তর: জওহরলাল নেহেরু।


নাজিমউদ্দীন মন্ত্রিসভা

প্রশ্ন: নাজিম উদ্দীন মন্ত্রিসভা গঠিত হয় কবে?
উত্তর: ২৪ এপ্রিল ১৯৪৩।

প্রশ্ন: নাজিম উদ্দীন মন্ত্রিসভার সদস্য কারা ছিলেন?
উত্তর: স্যার খাজা নাজিম উদ্দীন [প্রধানমন্ত্রী (স্বরাষ্ট্র, বেসামরিক প্রতিরক্ষা সমন্বয়কারী)], হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী (সিভিল সাপ্লাই), তুলসীচন্দ্র গোস্বামী (অর্থ), তজিমুদ্দিন খান (শিক্ষা), বরদা প্রসন্ন পাইন (যোগাযোগ ও পূর্ত), সৈয়দ সুজামুদ্দিন হোসেন (কৃষি), তারকানাথ মুখার্জী (রাজস্ব), মোশাররফ হোসেন (বিচার ও সংসদীয়), খাজা শাহাবুদ্দিন (বাণিজ্য, শ্রম, শিল্প ও যুদ্ধোত্তর পুনঃনির্মাণ), মৌলভী জালালউদ্দীন আহমদ (জনস্বাস্থ্য ও স্থানীয় সরকার), পুলিন বিহারী মল্লিক (প্রচার), যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডল (সমবায়, ঋণ ও পল্লী উন্নয়ন)। [সূত্র: সচিত্র বাংলাদেশ, নভেম্বর ২০০৮]

প্রশ্ন: বাংলাদেশের দুর্ভিক্ষ দেখা দেয় কবে?
উত্তর: ১৯৪৩ সালে।


১৯৪৬ সালের নির্বাচন ও সোহরাওয়ার্দী মন্ত্রিসভা

প্রশ্ন: ১৯৪৬ সালের নির্বাচনে মুসলীম লীগের নির্বাচনী মার্কা কি ছিল?
উত্তর: হারিকেন।

প্রশ্ন: সোহরাওয়ার্দীর মন্ত্রিসভা গঠিত হয় কবে?
উত্তর: ২৪ এপ্রিল ১৯৪৬।

প্রশ্ন: প্রথমে সোহরাওয়ার্দীর মন্ত্রিসভার সদস্য কি ছিল?
উত্তর: ৯ জন। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী (প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্র), খান বাহাদুর মোহাম্মদ আলী (অর্থ, জনস্বাস্থ্য ও স্থানীয় সরকার), খান বাহাদুর সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন (শিক্ষা, ভূমি ও ভূমি রাজস্ব), আহমেদ হোসেন (কৃষি, বন ও মৎস্য), যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডল (বিচার, সংসদীয় বিষয়ক ও নগর পূর্ত), খান বাহাদুর আবদুল গোফরান (বেসামরিক সরবরাহ), খান বাহাদুর আবুল ফজল (সমবায়, ঋণ ও রিলিফ), মোহাম্মদ আবদুর রহমান (সেচ ও নদীপথ), শামসুদ্দিন আহমেদ (বাণিজ্য, শিল্প ও শ্রম)। [সূত্র: সচিত্র বাংলাদেশ, নভেম্বর ২০০৮]

প্রশ্ন: অখণ্ড বাংলার শেষ মুখ্যমন্ত্রী/প্রধানমন্ত্রী কে?
উত্তর: হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী।

প্রশ্ন: সোহরাওয়ার্দীর পুনর্গঠিত মন্ত্রিসভার সদস্য ছিল কত?
উত্তর: ১০ জন। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী (প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্র), মোহাম্মদ আলী (অর্থ), সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন (শিক্ষা), আহমেদ হোসেন (কৃষি, বন ও মৎস্য), আবদুল গোফরান (সমবায়, ঋণ ও রিলিফ), শামসুদ্দিন আহমেদ (বাণিজ্য, শিল্প ও শ্রম), তারকানাথ মুখার্জী (সেচ ও নদীপথ), নগেন্দ্র নারায়ণ রায় (বিচার ও সংসদীয় বিষয়ক), ফজলুর রহমান (ভূমি, ভূমি রাজস্ব ও কারাগার-স্বরাষ্ট্র), দ্বারকানাথ বাড়ৈ (ওয়ার্কস ও বিল্ডিং)।

প্রশ্ন: সোহরাওয়ার্দীর মন্ত্রিসভার পতন ঘটে কবে?
উত্তর: ১৪ আগস্ট ১৯৪৭।


দ্বি-জাতিতত্ত্ব

প্রশ্ন: দ্বি-জাতিতত্ত্বের জনক কে?
উত্তর: মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ।

প্রশ্ন: দ্বি-জাতিতত্ত্ব কবে ঘোষণা করা হয়?
উত্তর: ১৯৩৯ সালে।

প্রশ্ন: দ্বি-জাতিতত্ত্ব কি?
উত্তর: ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি স্বাধীন জাতি ও রাষ্ট্র গঠনের মাধ্যমে ভারতকে রাজনৈতিকভাবে দ্বিধাবিভক্ত করার নির্ণায়ক ও আদর্শশ্রয়ী একটি রাজনৈতিক মতবাদ।

প্রশ্ন: দ্বিজাতি তত্ত্বের চূড়ান্ত মতবাদ কবে তুলে ধরা হয়?
উত্তর: ১৯৪০ সালের লাহোরে নিখিল ভারত মুসলিম লীগ সম্মেলনে।


মন্ত্রী মিশন বা কেবিনেট মিশন পরিকল্পনা

প্রশ্ন: কেবিনেট মিশনে সদস্য ছিল কতজন?
উত্তর: ৩ জন (স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপস, লর্ড প্যাথিক লরেন্স ও এ. ভি. আলেকজান্ডার)।

প্রশ্ন: কেবিনেট মিশনে প্রধান কে ছিলেন?
উত্তর: স্ট্যাফোর্ড ক্রিপস।

প্রশ্ন: ভারতীয় রাজনৈতিক শাসনতান্ত্রিক সমস্যাবলি নিরসনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এটলি কবে মন্ত্রী মিশন গঠন করেন?
উত্তর: ১৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৬।


ক্রিপস মিশন

প্রশ্ন: ক্রিপস মিশন কি?
উত্তর: ২৩ মার্চ ১৯৪২ কেবিনেট মন্ত্রী স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপসের নেতৃত্বে ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক ভারতে প্রেরিত একটি মিশন।

প্রশ্ন: ক্রিপস মিশন ভারতে আসে কবে?
উত্তর: ১৯৪২ সালে।

প্রশ্ন: উডহেড কমিশনের উদ্দেশ্য কি ছিল?
উত্তর: সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কারণ উদঘাটন করা।

প্রশ্ন: ‘উডহেড’ কী?
উত্তর: কমিশন।

প্রশ্ন: ‘ক্রিপস মিশন’ কোন্ উদ্দেশ্যে এ দেশে আগমন করে?
উত্তর: রাজনৈতিক।

প্রশ্ন: কোন দুটি বিষয়ের ওপর বিবেচনা করে ক্রিপস মিশন প্রণোদিত হয়?
উত্তর: প্রথমত, ১৯৪০ সালের অক্টোবরে গান্ধী কর্তৃক ‘সত্যাগ্রহ’ আন্দোলনের আহ্বান, যার উদ্দেশ্য ছিল ভারতে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ব্রিটিশদের যুদ্ধ তৎপরতাকে বিঘ্নিত করা এবং ব্রিটিশদের স্বার্থে এর সমাপ্তি টানা। দ্বিতীয়ত, যুদ্ধে জাপানের হাতে সিঙ্গাপুর (১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৪২), রেঙ্গুন (৮ মার্চ) ও আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের (২৩ মার্চ) পতন সমগ্র ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক কাঠামোকে হুমকির সামনে ফেলে দিয়েছিল। এ রকম সংকটময় পরিস্থিতিতে ব্রিটিশগণ উপলব্ধি করেছিল যে, ভারতীয়দের সমর্থন পেতে হলে কিছু কাজ করতে হবে।


ব্রিটিশ-ভারত বিভক্তি

প্রশ্ন: মুসলিম লীগ কবে প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবসের ডাক দেয়?
উত্তর: ১৬ আগস্ট ১৯৪৬ (২ সেপ্টেম্বর কালো দিবস)।

প্রশ্ন: ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কবে ক্ষমতা হস্তান্তরের ঘোষণা দেন?
উত্তর: ২০ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৭।

প্রশ্ন: কবে, কাদের বৈঠকে মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়?
উত্তর: ২ জুন ১৯৪৭; নেহেরু, জিন্নাহ, শিখ নেতা বলদেব সিং-এর সাথে মাউন্টব্যাটেনের বৈঠকে।

প্রশ্ন: মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনা প্রকাশ করা হয় কবে?
উত্তর: ৩ জুন ১৯৪৭।

প্রশ্ন: ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ‘ভারতীয় স্বাধীনতা আইন’ পাস হয় কবে?
উত্তর: ১৮ জুলাই ১৯৪৭।

প্রশ্ন: পাকিস্তান কবে স্বাধীনতা লাভ করে?
উত্তর: ১৪ আগস্ট ১৯৪৭।

প্রশ্ন: ভারত কবে স্বাধীনতা লাভ করে?
উত্তর: ১৫ আগস্ট ১৯৪৭।

প্রশ্ন: ১৯৪৭ সালের সীমানা কমিশন কোন্ নামে পরিচিত ছিল?
উত্তর: র‌্যাডক্লিফ কমিশন।

প্রশ্ন: ব্রিটিশ ভারত বিভক্তির সময় অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী কে ছিলেন?
উত্তর: হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী।

প্রশ্ন: লবণ সত্যাগ্রহ শুরু হয় কোন্ স্থান থেকে?
উত্তর: গুজরাটের ডান্ডি নামক স্থান থেকে।

প্রশ্ন: ‘করেঙ্গে ইয়ে মরেঙ্গে’ – বিখ্যাত এ উক্তিটি করেন কে?
উত্তর: মহাত্মা গান্ধী।

প্রশ্ন: সুভাষচন্দ্র বসুকে ‘নেতাজী’ উপাধিতে ভূষিত করে কে?
উত্তর: জার্মানির ভারতীয় সম্প্রদায়।

প্রশ্ন: উপমহাদেশের ভবিষ্যৎ সংবিধানের খসড়া তৈরি করে কোন্ কমিশন?
উত্তর: সাইমন কমিশন।

No comments:

Post a Comment