চীন থেকে অনেক দেশ ও অঞ্চলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়েছে। এরপর পথেঘাটে, অফিসে অনেকেই মাস্ক পরছেন। আবার মাস্ক ব্যবহারের পক্ষে-বিপক্ষে মতও দিচ্ছেন অনেকে। ঘুরেফিরে উঠে আসছে একটি প্রশ্নই, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কতটা প্রতিরোধ করবে ফেস মাস্ক?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু ফেস মাস্ক পরলেই নিজেকে নিরাপদ ভাবার সুযোগ নেই। পাতলা সার্জিক্যাল মাস্ক সাধারণ দূষণ, ধুলাবালু আটকাতে বেশি ব্যবহৃত হলেও তা পুরোপুরি নিরাপত্তা দেয় না। তবে ফ্লু আক্রান্ত ব্যক্তির মাস্ক পরা জরুরি। এর বাইরে মাস্কের দুটো উপকার আছে: মাস্ক পরা থাকলে নাকেমুখে হাতের স্পর্শ পড়ে কম, আর একেবারে মুখের সামনে কেউ হাঁচি-কাশি দিলে তার থেকে মাস্ক কিছুটা নিরাপত্তা দেয়। তবে সাধারণ মাস্কের ফাঁকফোকর গলে ভাইরাস বা বাতাসবাহিত ড্রপলেট সহজেই প্রবেশ করতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মাস্ক মুখে ঠিকমতো ফিটও হয় না।
সাধারণ চারকোনা সার্জিক্যাল মাস্ক পরে কিছু বৃহদাকার ড্রপলেট সংক্রমণ যেমন ফ্লু, হুপিং কফ, মেনিনজাইটিস অনেকাংশে প্রতিরোধ করা যায়। আক্রান্ত রোগী ও তার পরিচর্যাকারী, চিকিৎসক, নার্স, ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের এটা পরা উচিত। তবে প্রতিবার রোগীর পরিচর্যার পর ডিসপোজিবল এই মাস্ক ফেলে দিতে হবে। আধঘণ্টা পরপর পরিবর্তন করলে ভালো। মাস্কের নীল অংশটা পানিপ্রতিরোধী। আর ভেতরের (সাদা) অংশ নাক থেকে বের হওয়া পদার্থ শুষে নেয়। কেউ কাশি দিলে ভেতরের অংশটা সেটা শুষে নেয়। মাস্ক সঠিকভাবে পরা, আলাদা ঘরে বা কোণে গিয়ে খোলার পর সঠিক জায়গায় ফেলা ও ফেলার পর হাত পরিষ্কার করা উচিত।
করোনা, সার্স, যক্ষ্মা, হাম, চিকেন পক্স ইত্যাদি ভাইরাসের ক্ষুদ্র ড্রপলেট বাতাসে ভেসে বেড়ায়। একে প্রতিরোধ করার জন্য সম্ভব হলে গোলাকার এন-৯৫ রেসপিরেটর মাস্ক পরা উচিত। আক্রান্ত রোগী এ ক্ষেত্রে পেস মাস্ক পরবেন, কিন্তু পরিচর্যাকারী এন-৯৫ রেসপিরেটর পরবেন।
শুধু মাস্ক পরলেই হবে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, বারবার হাত ধোয়া, নাকমুখে হাতের স্পর্শ না লাগানো আর যেকোনো ফ্লু আক্রান্ত রোগী থেকে অন্তত ৬ ফুট দূরে অবস্থান করা—এই তিনটি নিয়ম পালন করা জরুরি।
ডা. মোহাম্মদ আজিজুর রহমান, বক্ষব্যাধি ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টার, লালবাগ, ঢাকা।
No comments:
Post a Comment