প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আকরাম-আল-হোসেন বলেছেন, এখন পর্যন্ত স্কুল খোলার পরিবেশ তৈরি হয়নি। স্কুল খোলার সিদ্ধান্তও এখনো হয়নি। তবে স্কুল খোলার আগে প্রতিটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক কোন কোন নির্দেশনা অনুসরণ করবেন, সেটি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন আকরাম-আল-হোসেন।
আগের দিন মঙ্গলবার কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে যখন পুনরায় বিদ্যালয় খুলবে তখন স্বাস্থ্যবিধি মেনে কী কী পদক্ষেপ নিতে হবে, তার একটি নির্দেশিকা প্রকাশ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। তাতে বলা হয়, যখন খুলবে, তখন সব শিক্ষক, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীকে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরতে হবে এবং হাত ধোয়াসহ স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। বিদ্যালয়ের অবকাঠামো ও শিক্ষার্থীর সংখ্যা বিবেচনায় নিয়ে একাধিক পালা বা সপ্তাহের একেক দিন একেক শ্রেণি শিক্ষার্থীদের পাঠদানের ব্যবস্থা করবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতে বলা হয়, বিদ্যালয় পুনরায় চালু করার সিদ্ধান্ত হলে নিরাপদ এলাকা ও পরিস্থিতি বিবেচনায় এলাকাভিত্তিক বিদ্যালয় চালু করা যেতে পারে। সরকার কোনো এলাকাকে ‘রেড জোন’ ঘোষণা করলে সেই এলাকায় বিদ্যালয় খোলা রাখা যাবে না। ছেলে ও মেয়েদের জন্য পৃথক শৌচাগার স্থাপন বা সম্প্রসারণ, মেয়েশিশুর ঋতুকালীন স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রাখতে হবে। বিদ্যালয় খোলার আগে অবশ্যই বিদ্যালয় প্রাঙ্গণসহ শ্রেণিকক্ষ, অফিসকক্ষ ও টয়লেটগুলো স্বাস্থ্যসম্মত ও জীবাণুমুক্ত করতে হবে। আর পাঠ পরিকল্পনায় পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। এ রকম অন্তত ৩৫টি নির্দেশনা মানার কথা বলা হয়েছে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশিকায়।
৩ অক্টোবর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা থাকার বিষয়টি উল্লেখ করে আজ সচিব বলেন, এখনো অনেক সময়। তবে স্কুল খোলার আগে প্রতিটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক কোন কোন নির্দেশনা অনুসরণ করবেন, সেটি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুনরায় স্কুল খোলার সেই পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, স্কুলগুলো পরিষ্কার করতে হবে। হাত ধোয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে। নিরাপত্তার জন্য মাস্ক নিশ্চিত করতে হবে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে স্কুল খোলার পরিকল্পনা করবে।
স্কুল খোলার ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি জানিয়ে সচিব বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বসে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
সচিব বলেন, ‘আমরা যখন মনে করব যে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে, স্কুলগুলো খোলার মতো পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে, তার আগেই প্রধান শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হবে যেন গাইডলাইন অনুসরণ করে স্কুলগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়।’
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এ কারণে ইতিমধ্যে এ বছররে প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। এমনকি করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে আগামী নভেম্বর মাসেও যদি বিদ্যালয় খোলা না যায়, তাহলে চলতি বছর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মূল্যায়ন পরীক্ষা নেওয়া হবে না। তবে অক্টোবর বা নভেম্বরে যদি বিদ্যালয় খোলে, তাহলে সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে মূল্যায়নের জন্য দুই ধরনের চিন্তা আছে।