করোনাভাইরাস বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা চলছে। বিশ্বের ১৭০ জায়গায় কাজ চলছে ভ্যাকসিন নিয়ে। করোনার উৎস দেশ চীন তার মধ্যে অন্যতম। ইতিমধ্যেই সে দেশে একাধিক গবেষণাগারে কোভিড-১৯-এর টিকা তৈরির কাজ চলছে। তবে ভ্যাকসিন নিয়ে এবার বেইজিং বলছে, গত জুলাই থেকে বেশ কয়েকজনকে করোনার ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ব যখন করোনাভাইরাস থেকে মুক্তির অপেক্ষায় দিন গুনছে, এর মধ্যে চীন ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজও শুরু করেছে। চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশন সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি সেন্টারের প্রধান ঝেং ঝংইউ গতকাল রোববার দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সিসিটিভিকে জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যকর্মী, সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ জরুরি ক্ষেত্রে কর্মরত লোকজনের অনেককেই কোভিড-১৯-এর ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে (ইমার্জেন্সি ইউজ) ব্যবহারের জন্য সেই ভ্যাকসিন ব্যবহার করা হচ্ছে।
সাত দিন ধরে চীনে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কোনো খবর মেলেনি। আর সীমান্ত রক্ষার কাজে নিয়োজিত বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে এ রোগের সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বেশি। তাই তাঁদের মধ্যে এ রোগের ভাকসিন দেওয়া হয়েছে বলেও জানান ঝেং ঝংইউ।
ঝেং জানান, ভ্যাকসিন ব্যবহার করা হচ্ছে কিছু কিছু ক্ষেত্রে। ভ্যাকসিন ব্যবহারের পর তা পর্যবেক্ষণও করা হচ্ছে। ঝেং ঝংউইয়ের এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে ভ্যাকসিন ব্যবহারের কথা প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে জানায় চীন। তবে কতজনের ওপর কীভাবে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে, তার বিস্তারিত কিছু ঝেং অবশ্য জানাননি।
চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেসিয়াং বলেছেন, ভ্যাকসিন উৎপাদন শুরু হওয়ার পর চীন মেকং অঞ্চলের দেশ মিয়ানমার, লাওস, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া ও ভিয়েতনামকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সরবরাহ করবে। আজ সোমবার ল্যাঙ্কাং-মেকং কো-অপারেশন অনলাইন লিডার্সের বৈঠকে তিনি আরও বলেন, চীন এ অঞ্চলের জন্য একটি ‘বিশেষ জনস্বাস্থ্য তহবিল’ গঠন করবে।
এদিকে, ভ্যাকসিন নিয়ে কূটনীতিতেও নেমে পড়েছে চীন। যেসব দেশে তারা আধিপত্য বিস্তার করতে চায়, সেখানে আগে ভ্যাকসিন পৌঁছে দিতে চাইছে দেশটি। পাকিস্তানে প্রথমবার চীনের ভ্যাকসিনের ফেজ থ্রি ট্রায়াল চালানো হচ্ছে। একটি সংস্থার মাধ্যমে ইতিমধ্যেই আর্জেন্টিনায় ট্রায়াল চালানো হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই সৌদি আরবে এই ট্রায়াল চালানো হবে।
বিশ্বে করোনা ভ্যাকসিনের গবেষণা হচ্ছে ১৭০টি জায়গায়। চীনে বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে তৃতীয় পর্যায় বা ফেজ থ্রি ভ্যাকসিন পরীক্ষা চলছে। সবই পর্যবেক্ষণ করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
No comments:
Post a Comment