চুল পাকা নাকি অভিজ্ঞতার বাহ্যিক প্রকাশ। তবে কারও বয়স হলেও চুল দেখে বোঝা যায় না, আবার কারও কম বয়সেই চুল পেকে যায়। চুল না পাকলে তরুণ দেখায় বটে, কিন্তু যাঁদের চুল কম বয়সেই পাকে, তাঁরা খানিক ঝক্কিতেই পড়েন বৈকি।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চর্মরোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এস এম বখতিয়ার কামাল জানালেন, কম বয়সে চুল পাকার সঠিক কারণ এখনো জানা সম্ভব হয়নি। নানা কারণে কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হলে, চুলে পাক ধরতে পারে বলে ধারণা করা হয়। বংশগত কারণেও হতে পারে। সঠিক চিকিৎসা এখনো আবিষ্কার করা যায়নি।
জেনে নিন
শোভন মেকওভারের কসমেটোলজিস্ট শোভন সাহা জানালেন এ–সম্পর্কিত কিছু বিষয়ের কথা। পড়ালেখা, পারিবারিক সমস্যা, অল্প বয়সের আবেগময় সম্পর্ক, কম বয়সে অনেকের নানা চাপ থাকতে পারে (কাউন্সেলিংয়ের প্রয়োজন হতে পারে)। মানসিক চাপে ঘুম কমে, সিগারেট বা মাদক সেবনের প্রবণতা থাকে। অবসন্নতায় রুচি কমতে পারে, খাবারে অনিয়মও হয়। ফলে পুষ্টির অভাব দেখা দিতে পারে। কিছু রোগের প্রভাবও থাকতে পারে।
প্রতিকার নেই?
পেকে যাওয়া চুল আর কালো হবে না। হার্বস আয়ুর্বেদিক ক্লিনিকের আয়ুর্বেদিক রূপবিশেষজ্ঞ আফরিন মৌসুমি জানালেন চুল পাকার হার কমানোর কিছু উপায়—
● ক্যালসিয়াম ও ভিটামিনসমৃদ্ধ খাবার খান।
● মাথার ত্বক শুষ্ক হলে হালকা ধাঁচের শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। এ ছাড়া সপ্তাহে ১ দিন ১টি পাকা কলা (ছোট আকৃতির), ১ টেবিল চামচ মধু আর ১টা গোটা পেঁয়াজ পেস্ট করে সরাসরি মাথার ত্বকে লাগিয়ে রাখতে পারেন ১ ঘণ্টা।
● ১ কাপ মেহেদিপাতার রসে ২ টেবিল চামচ মেথি সারা রাত ভিজিয়ে রেখে সকালে পেস্ট করে মাথার ত্বকে লাগিয়ে রাখুন ১ ঘণ্টা, সপ্তাহে ২ দিন।
● ১ কাপ কাঁচা আমলকীর রসে ৬টি হরীতকী ভিজিয়ে রাখুন সারা রাত। সকালে পেস্ট করে মাথার ত্বকে লাগিয়ে ১ ঘণ্টা অপেক্ষা করুন, এভাবে সপ্তাহে ২ দিন মাথায় ব্যবহার করুন।
পাকা চুলে কী হবে?
পাকা চুল ওঠালে আরও চুল উঠতে পারে। মেহেদি লাগাতে পারেন। এ ছাড়া প্রাকৃতিক উপায়ে বার্গেন্ডি-জাতীয় রং আনার উপায় জানালেন আফরিন মৌসুমি—
১ কাপ তাজা মেহেদিপাতা বাটা ও ১ কাপ বিটের রস একসঙ্গে ফুটিয়ে নিন। অন্য পাশে এক কাপ পানিতে ৩ চা–চামচ চাপাতা ফোটাতে হবে, ঘন হয়ে আধা কাপ পরিমাণমতো হলে এক টেবিল চামচ কফি দিন। এবার প্রথম মিশ্রণটি গরম থাকা অবস্থায় তাতে চা ও কফির এই মিশ্রণ ভালোভাবে মেশান। চুলে লাগিয়ে ধোয়ার আগে দুই-আড়াই ঘণ্টা অপেক্ষা করুন।
সবার জন্য
চুলে রাসায়নিক ব্যবহার না করাই ভালো, নিতান্ত করতে চাইলেও মানসম্মত উপাদানে (তবে মাথার ত্বকে নয় কখনোই)। যাঁরা চুলে রং, ব্লো-ড্রাই, স্ট্রেইটনিং প্রভৃতি করেন, তাঁরা প্রতিদিন তেল মালিশ করুন অবশ্যই। তেলে সামান্য কর্পূর মিশিয়ে নেওয়া ভালো।
প্রতিদিন শ্যাম্পু করলে হালকা ধরনের শ্যাম্পু বেছে নিন। না হলে সাধারণ শ্যাম্পুর সঙ্গে সমপরিমাণ গোলাপজল মিশিয়ে নিয়ে স্বাভাবিক নিয়মে ব্যবহার করুন।
মাথার ত্বক তৈলাক্ত হলে বারবার শ্যাম্পু করার প্রবণতা থাকে। ফলে মাথার ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়ে। যাঁদের মাথার ত্বক তৈলাক্ত, মাথা ঘামে বা মাথার ত্বকে ফুসকুড়ি হয়, তাঁরা শ্যাম্পুর সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে নিতে পারেন (দুই টেবিল চামচ শ্যাম্পু নিলে তাতে মাঝারি আকৃতির লেবুর দুটি টুকরার রস মেশাতে হবে)।
নিয়ম না জেনে চুলে প্যাক লাগাবেন না।
No comments:
Post a Comment