বাইরে প্রচণ্ড ঠান্ডা বাতাস, কুয়াশা। যাদের ঠান্ডাজনিত সমস্যা, অ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট আছে, তারা এ সময় প্রয়োজন ছাড়া সহজে ঘরের বাইরে যেতে চান না। যাঁরা নিয়মিত হাঁটেন, তাঁদের অনেকেই শীতকালে হাঁটা বন্ধ করে দেন। এতে শীতে আবার ওজন বাড়ে, ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি কমে যায়। তাই কনকনে ঠান্ডায় বাইরে না গিয়ে ঘরের ভেতরেই করতে পারেন কিছু ব্যায়াম, যা হাঁটার মতোই উপকারী।
হাঁটা হচ্ছে একধরনের অ্যারোবিক ব্যায়াম। যেসব ব্যায়ামের ফলে হৃৎস্পন্দন দ্রুত হয় এবং শরীর ঘামতে শুরু করে, তা অ্যারোবিক ব্যায়াম হিসেবে পরিচিত। যেমন হাঁটা, জগিং, নাচ, দড়ি লাফ, সাঁতার কাটা, সিঁড়ি ওঠানামা ইত্যাদি। গবেষকদের মতে, একজন সুস্থ ব্যক্তির জন্য সপ্তাহে ৩০০ মিনিট অ্যারোবিক ব্যায়াম যথেষ্ট। অ্যারোবিক ব্যায়ামের ফলে ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগসহ অন্যান্য রোগ ও ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। তাই প্রতিকূল পরিবেশে বাইরে গিয়ে হাঁটার পরিবর্তে অন্য যেসব অ্যারোবিক ব্যায়াম করতে পারেন:
দড়ি লাফ: দড়ি লাফ হচ্ছে একটি উৎকৃষ্ট মানের অ্যারোবিক ব্যায়াম। এটা যেকোনো জায়গায়, যেকোনো সময় ও যেকোনো পরিবেশে করা যায়। এটি প্রতি মিনিটে ১৫-২০ ক্যালরি বার্ন করে। যদি কোনো স্বাভাবিক মানুষ ১৫ মিনিট দড়ি লাফায় (প্রতি মিনিট ১২০টি লাফ) তবে তার প্রায় ২২০-৩০০ ক্যালরি বার্ন হয়। এটি দৌড়ানোর চেয়েও ২৫ গুণ বেশি ক্যালরি বার্ন করে। প্রতিদিন ১৫-৩০ মিনিট পর্যন্ত করতে পারেন।
স্টেশনারি বাইক: কারও যদি স্টেশনারি বাইক (একই জায়গায় বসে পা দিয়ে চাকা ঘোরানোর ব্যবস্থা) থাকে তবে এটি চালাতে পারেন। এটি ৩০ মিনিট চালালে প্রায় ২৫০-৩৭০ ক্যালরি বার্ন করে।
সিঁড়ি ওঠানামা: সিঁড়ি ওঠানামা করাও একটি ভালো অ্যারোবিক ব্যায়াম। কেউ যদি প্রতি মিনিটে ৭৭ ধাপ করে সিঁড়ি ওঠানামা করে, তবে তার ৩০ মিনিটে প্রায় ২২৫-৩৩৫ ক্যালরি বার্ন হবে।
জগিং জাম্প: জগিং জাম্প যেকোনো জায়গায় করা যায়। দুই পা ফাঁক করে দাঁড়ান। এবার দুই হাত ওপরে তুলে লাফ দিন। আবার লাফ দিয়ে দুই হাত নামান। জগিং জাম্পের মাধ্যমে একজন সুস্থ মানুষ প্রতি ঘণ্টায় ৫৩০ ক্যালরি পর্যন্ত বার্ন করতে পারে। এটি ১৫-৩০ মিনিট পর্যন্ত করতে পারেন। এতে প্রায় ১৫০-২৭০ ক্যালরি পর্যন্ত বার্ন হয়।
ঘরের ভেতরে হাঁটা: ঘরের ভেতরে হাঁটা, বাইরে হাঁটার মতোই উপকারী। যদি কেউ প্রতি মিনিটে ৯০-১০০ ধাপ হাঁটতে পারে, তবে ঘণ্টায় প্রায় ২৪৫ ক্যালরি বার্ন হয় (ঘরে ও বাইরে একই)
মেহেরুন নেসা, ফিজিওথেরাপি ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ
No comments:
Post a Comment