Tuesday, November 13, 2018

সংস্কার আন্দোলন ও বাংলার জাগরণ (প্রখম পর্ব)


প্রশ্ন: ব্রিটিশ বণিকদের বিরুদ্ধে একজন চাকমা জুমিয়া নেতা বিদ্রোহের পতাকা উড়িয়েছিলেন, তার নাম কি?
উত্তর: জান বখশ খাঁ।

প্রশ্ন: ব্রিটিশ আমলে বাংলাদেশে যেসব আন্দোলন হয়েছিল তার মধ্যে কোনটি প্রধান?
উত্তর: ফরায়েজী আন্দোলন।

প্রশ্ন: উপমহাদেশে প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম কখন সংঘটিত হয়?
উত্তর: ১৮৫৭ সালে।

প্রশ্ন: প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম কোনটি?
উত্তর: সিপাহী বিপ্লব।

প্রশ্ন: ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে বাঙালিদের প্রথম বিদ্রোহ কোনটি?
উত্তর: ফকির ও সন্ন্যাসী (১৭৫৭-১৮০৩)।

প্রশ্ন: ঢাকায় ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহের স্মৃতি বিজড়িত স্থান কোনটি?
উত্তর: বাহাদুর শাহ পার্ক।

প্রশ্ন: মাস্টারদা সূর্যসেনের ফাঁসি কার্যকর হয়েছিল কোথায়?
উত্তর: চট্টগ্রামে।


ওয়াহাবী আন্দোলন ও সৈয়দ আহমদ বেরেলভী

প্রশ্ন: ‘ওয়াহাবী’ কথাটি কার নাম থেকে এসেছে?
উত্তর: মুহম্মদ ইবনে আব্দুল ওয়াহাব (১৭০৩-১৭৯২)।

প্রশ্ন: মুহম্মদ ইবনে আব্দুল ওয়াহাব কোন্ দেশের অধিবাসী?
উত্তর: সৌদি আরবের।

প্রশ্ন: মুহম্মদ ইবনে আব্দুল ওয়াহাবের সংস্কার আন্দোলনের উদ্দেশ্য কি ছিল?
উত্তর: কুসংস্কার ও অনৈসলামিক রীতিনীতি দূর করে পবিত্র কোরআন ও হাদিসের নির্দেশিত সরল আদর্শে মুসলিম সমাজকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা।

প্রশ্ন: ভারতবর্ষে ওয়াহাবী মত ও আদর্শ প্রচারের পথিকৃৎ ছিলেন কে?
উত্তর: সৈয়দ আহমদ বেরেলভী।

প্রশ্ন: সৈয়দ আহমদ বেরেলভী কার শিষ্য ছিলেন?
উত্তর: দিল্লির বিখ্যাত আলেম শাহ ওয়ালিউল্লাহর (১৭০৩-৬০) পুত্র শাহ আব্দুল আজিজ ও শাহ আব্দুল কাদিরের শিষ্য।

প্রশ্ন: সৈয়দ আহমদ বেরেলভী কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: ১৭৮৬ সালে উত্তর প্রদেশে লক্ষ্মৌর নিকটে রায়বেরিলিতে।

প্রশ্ন: সৈয়দ আহমদ বেরেলভী কবে শিখদের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেন?
উত্তর: ১৮২৬ সালে।

প্রশ্ন: সৈয়দ আহমদ বেরেলভী নিহত হন কবে?
উত্তর: ১৮৩১ সালে, বালাকোটের যুদ্ধে।

প্রশ্ন: কত সালে ওয়াহাবী আন্দোলনের পরিসমাপ্তি ঘটে?
উত্তর: ১৮৯০ সালে।


ফরায়েজী আন্দোলন ও হাজী শরীয়তউল্লাহ

প্রশ্ন: ফরায়েজী আন্দোলন অর্থ কি?
উত্তর: ফরজ পালনের জন্য আন্দোলন।

প্রশ্ন: ফরায়েজী আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা বা উদ্যোক্তা কে?
উত্তর: হাজী শরীয়তউল্লাহ।

প্রশ্ন: হাজী শরীয়তউল্লাহর মতে কবর পূজা, পীরপূজা, সেজদা করা কি?
উত্তর: শেরক পাপ।

প্রশ্ন: দারুল হারব-এর অর্থ কি?
উত্তর: যুদ্ধরত দেশ।

প্রশ্ন: হাজী শরীয়তউল্লাহর বাড়ি বর্তমান কোন্ জেলায় অবস্থিত?
উত্তর: শরীয়তপুর।

প্রশ্ন: ছেলেবেলায় হাজী শরীয়তউল্লাহ বাড়ি থেকে পালিয়ে কোথায় যান?
উত্তর: কলকাতায়।

প্রশ্ন: ফুরফুরা জায়গাটি কোন্ জেলায় অবস্থিত?
উত্তর: হুগলি।

প্রশ্ন: হাজী শরীয়তউল্লাহ কত সালে দেশে ফিরে ফরায়েজী আন্দোলন শুরু করেন?
উত্তর: ১৮১৮ সালে।

প্রশ্ন: হাজী শরীয়তউল্লাহর ধর্মীয় আন্দোলনের নাম ‘ফরায়েজী’ হলো কেন?
উত্তর: হাজী শরীয়তউল্লাহ ‘ফরজ’ নির্দেশগুলো পালনের ওপর অত্যাধিক গুরুত্ব দেন বলে ফরজ পালনকারী অর্থে ‘ফরায়েজী’ হয়েছে।

প্রশ্ন: বাংলার কোন্ মুসলমান পলাশীর পরাধীনতার পর প্রথম বাংলার মুসলমানদের চরম অবনতির কথা উপলব্ধি করেন?
উত্তর: হাজী শরীয়তউল্লাহ।

প্রশ্ন: হাজী শরীয়তউল্লাহ কবে, কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: ১৭৮১ সালে; বর্তমান মাদারীপুর জেলাধীন শিবচর থানার শামাইল গ্রামে। (মৃত্যু ১৮৪০)

প্রশ্ন: হাজী শরীয়তউল্লাহর নামে কোন্ জেলার নামকরণ করা হয়েছে?
উত্তর: শরীয়তপুর।

প্রশ্ন: ফরায়েজী আন্দোলনের প্রধান কেন্দ্র ছিল কোন্ জেলা?
উত্তর: ফরিদপুর জেলা।

প্রশ্ন: মক্কা যাওয়ার পথে দুদু মিয়া বাংলার কোন্ সংগ্রামী নেতার সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন?
উত্তর: তিতুমীর।

প্রশ্ন: কোন্ মাওলানা ফরায়েজী মতবাদকে ‘খারিজি’ ঘোষণা করেন?
উত্তর: মাওলানা কেরামত আলী জৌনপুরী।

প্রশ্ন: দার-উল-হরব কথাটির অর্থ কি?
উত্তর: বিধর্মীয় রাজ্যে/যে রাজ্য ইসলামী অনুশাসন দ্বারা পরিচালিত হয় না।

প্রশ্ন: দার-উল-হরবে জুমআর নামাজ ও ঈদের নামাজ না পড়ার পরামর্শ দেন কে?
উত্তর: হাজী শরীয়তউল্লাহ।


দুদু মিয়া

প্রশ্ন: হাজী শরীয়তউল্লাহর মৃত্যুর পর কে ফরায়েজী আন্দোলনের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন?
উত্তর: দুদু মিয়া।

প্রশ্ন: দুদু মিয়ার আসল নাম কি?
উত্তর: পীর মুহসীনউদ্দীন আহমদ।

প্রশ্ন: দুদু মিয়া কে ছিলেন?
উত্তর: ফরায়েজী নেতা।

প্রশ্ন: দুদু মিয়া জন্মগ্রহণ করেন কত সালে?
উত্তর: ১৮১৯ সালে।

প্রশ্ন: দুদু মিয়ার নেতৃত্বে ফরায়েজী আন্দোলন কি রূপ নেয়?
উত্তর: সশস্ত্র সংগ্রামে।

প্রশ্ন: দুদু মিয়া আন্দোলনকে শক্তিশালী করার জন্য কি গড়ে তোলেন?
উত্তর: সংগঠন।

প্রশ্ন: দুদু মিয়া বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে কি নিযুক্ত করেন?
উত্তর: খলিফা।

প্রশ্ন: দুদু মিয়ার সংগঠনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য কি ছিল?
উত্তর: ন্যায়ভিত্তিক এবং অত্যাচারী জমিদারদের বিরুদ্ধেরুখে দাঁড়ানো এবং বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা।

প্রশ্ন: দুদু মিয়া কবে ইন্তেকাল করেন?
উত্তর: ২৪ সেপ্টেম্বর ১৮৬২।

প্রশ্ন: দুদু মিয়াকে কোথায় সমাহিত করা হয়?
উত্তর: ঢাকার বংশালে।


তিতুমীরের আন্দোলন

প্রশ্ন: কোন্ বাঙালি প্রথম ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করে শহিদ হয়েছিলেন?
উত্তর: শহিদ তিতুমীর।

প্রশ্ন: তিতুমীরের প্রকৃত নাম কি?
উত্তর: মীর নিসার আলী।

প্রশ্ন: তিতুমীরের জন্মস্থান কোথায়?
উত্তর: চব্বিশ পরগণা জেলার বারাসাত মহকুমার চাঁদপুর গ্রামে (মতান্তরে হায়দারপুরে)।

প্রশ্ন: কার নেতৃত্বে বাঁশের কেল্লা ধ্বংস হয়?
উত্তর: লেফটেন্যান্ট কর্নেল স্টুয়ার্ট।

প্রশ্ন: শহিদ তিতুমীর কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: ১৭৮২ সালে (মৃত্যু ১৯ নভেম্বর ১৮৩১)।

প্রশ্ন: তিতুমীর মক্কায় অবস্থানকালে কার শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন?
উত্তর: সৈয়দ আহমদ শহীদের।

প্রশ্ন: তিতুমীর মক্কা থেকে কত সালে ফিরে এসে সমাজ সংস্কারে আত্মনিয়োগ করেন?
উত্তর: ১৮২৭ (মক্কা যান ১৮২২ সালে)।

প্রশ্ন: তিতুমীর কত সালে বাঁশের কেল্লা নির্মাণ করেন?
উত্তর: ১৮৩১ সালের অক্টোবরে।

প্রশ্ন: বাঁশের কেল্লা খ্যাত স্বাধীনতা সংগ্রামী কে?
উত্তর: তিতুমীর।

প্রশ্ন: তিতুমীর কোথায় বাঁশের কেল্লা নির্মাণ করেন?
উত্তর: নারিকেলবাড়িয়ায়।

প্রশ্ন: কোন্ সালের কত তারিখে ইংরেজ সৈন্যরা নারিকেলবাড়িয়া কেল্লা আক্রমণ করেন?
উত্তর: ১৯ নভেম্বর ১৮৩১।

প্রশ্ন: তিতুমীর কবে, কিভাবে মৃত্যুবরণ করেন?
উত্তর: ১৯ নভেম্বর ১৮৩১, লেফটেন্যান্ট কর্নেল স্টুয়ার্টের সঙ্গে যুদ্ধকালে।


রাজা রামমোহন রায় ও সংস্কার

প্রশ্ন: রামমোহন রায়ের জন্ম কোথায়?
উত্তর: হুগলী জেলায়।

প্রশ্ন: ভারতে প্রথম আধুনিক পুরুষ খ্যাতি অর্জন করেন কে?
উত্তর: রাজা রামমোহন রায়।

প্রশ্ন: ঊনিশ শতকে বাংলার নবজাগরণের অগ্রদূত কে ছিলেন?
উত্তর: রাজা রামমোহন রায়।

প্রশ্ন: রামমোহন রায় কোন্ ভাষার সুপণ্ডিত ছিলেন?
উত্তর: আরবি-ফার্সি ভাষার।

প্রশ্ন: ‘তুফাত-উল-মোয়াহিদ্দীন’ নামের আরবি ও ফার্সি ভাষার একটি বই রচনা করেন কে?
উত্তর: রাজা রামমোহন রায়।

প্রশ্ন: রামমোহন রায় ডিগবী সাহেবের অধীনে কোথায় চাকরি করেন?
উত্তর: রংপুরে।

প্রশ্ন: একেশ্বরবাদের বাণী প্রচারে রামমোহন রায় কোন্ সমিতি গঠন করেন?
উত্তর: আত্মীয় সভা।

প্রশ্ন: কত সালে ‘আত্মীয় সভা’ নামে সমিতি গঠন করা হয়?
উত্তর: ১৮১৫ সালে।

প্রশ্ন: রামমোহন রায় কত ‘অ্যাংলো হিন্দু স্কুল’ প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর: ১৮২২ সালে।

প্রশ্ন: রামমোহন রায়কে ‘রাজা’ উপাধি দিয়েছিলেন কে?
উত্তর: সম্রাট দ্বিতীয় আকবর।

প্রশ্ন: রামমোহন রায় কোথায় মৃত্যুবরণ করেন?
উত্তর: ইংল্যান্ডের বিস্টল শহরে।

প্রশ্ন: আধুনিক ভারতের জনক বলা হয় কাকে?
উত্তর: রাজা রামমোহন রায়কে।

প্রশ্ন: হিন্দুধর্মের পৌত্তলিকতা ও কুসংস্কারের নিন্দা করে একেশ্বরবাদ সম্পর্কে রামমোহন রায়ের প্রথম রচনার নাম কি?
উত্তর: তুফাত-উল-মুয়াহিদ্দীন (১৮০৩)।

প্রশ্ন: রাজা রামমোহন রায় কোন পুস্তিকায় খ্রিস্টধর্ম সম্পর্কে তার মতামত প্রকাশ করেন?
উত্তর: The Precepsts of Jesus (1820)

প্রশ্ন: বেদান্তবাদ শিক্ষা দানের জন্য রামমোহন রায় কোন্ কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর: বেদান্ত কলেজ (১৮২৫)।

প্রশ্ন: একেশ্বরবাদ প্রচার করার জন্য ইউনিটেরিয়া কমিটি (১৮২১ খ্রি.) নাম ধর্মসভা গঠন করেন কে?
উত্তর: রাজা রামমোহন রায়।

প্রশ্ন: ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠিত হয় কখন?
উত্তর: ২ আগস্ট ১৮২৮।

প্রশ্ন: জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারের কে রামমোহন রায়ের ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন?
উত্তর: প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর।

প্রশ্ন: দ্বারকানাথ ঠাকুর ১৮২৯ সালে রামমোহনের সহায়তায় কোন্ পত্রিকা প্রকাশ করেন?
উত্তর: বেঙ্গল হেরাল্ড ও বঙ্গদূত পত্রিকা।

প্রশ্ন: কোন্ সমাজসংস্কারক বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ, কৌলিন্য প্রথা, গঙ্গা সাগরে সন্তান বিসর্জন, শিশুকন্যা হত্যা প্রভৃতি কুপ্রথার বিরুদ্ধে চরম আন্দোলন গড়ে তোলেন?
উত্তর: রাজা রামমোহন রায়।

প্রশ্ন: কোন্ ব্রিটিশ শাসক গঙ্গা সাগরে সন্তান বিসর্জন ও শিশুকন্যা হত্যা নিষিদ্ধ করেন?
উত্তর: উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক।

প্রশ্ন: ইংরেজি-বাংলা দ্বিভাষিক ব্রাহ্মনিক্যাল ম্যাগাজিনটির নাম কি ছিল?
উত্তর: ব্রাহ্মণ সেবখি।

প্রশ্ন: কাকে ভারতীয় রেনেসাঁস বা না জাগরণের অগ্রদূত বলা হয়?
উত্তর: রাজা রামমোহন রায়কে।

প্রশ্ন: বাংলা ভাষায় বেদান্তের ভাষ্য রচনা এবং ‘ঈশ’ ‘কেন’ ‘কঠ’ প্রভৃতি উপনিষদ প্রকাশ করেন কে?
উত্তর: রাজা রামমোহন রায়।

প্রশ্ন: ‘ব্রাহ্ম-সমাহ’ নামের পরিবর্তে ‘ব্রাহ্ম ধর্ম’ নাম গ্রহণ করা হয় কবে?
উত্তর: ১৮৪৩ সালে।

প্রশ্ন: ব্রাহ্ম সমাজ মোট কয়টি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছিল?
উত্তর: তিনটি। যথা- আদি সমাজ, নব-বিধান, সাধারণ ব্রাহ্ম সমাজ।

প্রশ্ন: আদি ব্রাহ্ম সমাজের প্রধান ছিলেন কে?
উত্তর: দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর।

No comments:

Post a Comment