গাজরের রং যেমন আকর্ষণীয়, তেমনি পাতাও বেশ সুদর্শন। পাতার গড়ন অনেকটা ধনেপাতার মতোই। মুলা বা আলুর মতোই এই সবজি মাটির নিচে জন্মে। শীতের এই সবজি পুষ্টি ও গুণমানে অনন্য। সালাদ, রান্না সবজি ও হালুয়া তৈরিতে গাজরের ব্যবহার লক্ষণীয়।
গাজর (Daucus carota) দেশের সর্বত্র চাষ হয়। বর্ষজীবী খাড়া বিরুৎ, ফুলসহ ১০০-১২০ সেন্টিমিটার লম্বা। মূল শিকড় লম্বা, মোটা, মাংসল, ক্রমান্বয়ে সরু, হলুদাভ-কমলা রঙের। পাতা একই স্থান থেকে হয়, কর্তিত। ফুল সাদা। সবজি হিসেবে কাঁচা খাওয়া যায়। খাদ্যাংশ থেকে বিভিন্ন খাদ্য তৈরি হয়। বীজ থেকে উৎপন্ন হয় চারা।
গাজরের পুষ্টিগুণ শরীর ও ত্বক দুটির জন্যই উপকারী। প্রতি ১০০ গ্রাম গাজরে আছে ক্যারোটিন ১০, ৫২০ মাইক্রোগ্রাম, শর্করা ১২.৭ গ্রাম, আমিষ ১.২ গ্রাম, জলীয় অংশ ৮৫.০ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২৭.০ মিলিগ্রাম, আয়রন ২.২ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি১ ০০.০৪ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি২ ০.০৫ মিলিগ্রাম, চর্বি ০.২ গ্রাম, ভিটামিন সি ১৫ মিলিগ্রাম, আঁশ ১.২ গ্রাম, অন্যান্য খনিজ ০.৯ গ্রাম, খাদ্যশক্তি ৫৭ ক্যালরি।
গাজরে আছে বিটা ক্যারোটিন, যা লিভারে গিয়ে ভিটামিন এ-তে রূপান্তর হয়। পরে সেটি চোখের রেটিনায় গিয়ে দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। গাজরে বিদ্যমান ফ্যালক্যারিনল ও ফ্যালক্যারিডিওল উপাদান ক্যান্সারের ক্ষতিকর কোষ গঠনে বাধা দিতে সক্ষম। আবার সংক্রমণ রোধেও গাজর খুব কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। খানিকটা গাজর ব্লেন্ড করে কাটা জায়গায় লাগিয়ে দিলে উপকার পাওয়া যায়। গাজরের ক্যারোটিনয়েডগুলো হৃৎপিণ্ডের নানা অসুখের কাজ করে। ওজন কমানোর জন্যও গাজর উপযুক্ত সবজি।
শীতে ত্বকের শুষ্কতা রোধে গাজরের জুস করে খেলে ত্বক নরম ও কোমল থাকবে। এ ছাড়া খাবার তালিকায় নিয়মিত গাজর থাকলে ত্বকের বাহ্যিক সমস্যা কমে যায়। গাজরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে, যেগুলো ত্বককে ব্রণ থেকে রক্ষা করে। এমনকি ব্রণ আক্রান্ত জায়গায় গাজরের রস লাগালেও উপশম হয়। তবে অতিরিক্ত গাজর শরীরে ইউরিক এসিড বাড়ায়।
No comments:
Post a Comment